উপচে পড়া ভিড় কমলাপুরে, চাপ সামলাতে বিশেষ ট্রেন
২৭ জুন ২০২৩ ১১:২৪
ঢাকা: পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি মাত্র একদিন। গত সপ্তাহ থেকে পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। মঙ্গলবার (২৭ জুন) থেকে মূল ছুটি শুরু। তাই চাকরিজীবীদের বাড়ি ফেরার ঢল শুরু আজ থেকেই। আগের দিন রাত থেকে কমলাপুর স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সকাল সাড়ে ৬টায় প্রথম ট্রেন ছাড়ার শিডিউল থাকলেও যাত্রীরা আগেভাগেই হাজির হয়েছেন স্টেশনে। এদিকে যাত্রীদের চাপ সামলাতে আজ থেকে বিশেষ ট্রেন চলাচল করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ঈদের আগে সরকারি চাকরিজীবীদের শেষ কর্মদিবস ছিল গতকাল সোমবার (২৬ জুন)। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, শেয়ারবাজার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সব কিছু বন্ধ রয়েছে। তাই গত কয়েকদিনের তুলনায় মঙ্গলবার ভোর থেকেই কমলাপুরে মানুষের চাপ দেখা গেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনের চেয়ে আজ কমলাপুরে যাত্রীদের ভিড় বেশি। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এমন ভিড় হতে পারে। টিকিটবিহীন যাত্রীদের ক্ষেত্রে এবার কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কোনো যাত্রী বিনাটিকিটে স্টেশন এলাকায় প্রবেশ করতে পারছেন না।
রেলওয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ২৪ জুন থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষজন। এরপর থেকে ঈদ শিডিউল অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন করছে ট্রেন। এক্ষেত্রে বড় ধরনের শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা এখনো ঘটেনি। তবে মঙ্গলবার দিনের শুরুর ট্রেন কিছুটা বিলম্ব হওয়া ক্ষোভ জানিয়েছেন যাত্রীরা। ধূমকেতু এক্সপ্রেসে যাত্রী রফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘পরিবারের অন্য সদস্যদের আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের ট্রেন যথাসময়ে রাজশাহীর উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছে। যাত্রায় কোনো বিলম্ব হয়নি। তবে আজ প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করছি, এখনো ট্রেন আসেনি।’ মহানগর প্রভাতীর যাত্রী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আগে ট্রেন বিলম্ব হতো। এবার আমাদের ট্রেন সঠিক সময়ে স্টেশন ছাড়ছে।’
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল সোমবার থেকেই মূলত চাপ শুরু হয়েছে। আজ-কাল (মঙ্গলবার ও বুধবার) যাত্রীদের চাপ থাকবে। সেজন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবারও শতভাগ অনলাইনে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা ছিল। ফলে আগের মতো স্টেশনে চাপ ছিল না। তাছাড়া ২৫ ভাগ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হয়। রেলের লাভ-লোকসান বিবেচ্য বিষয় নয়। যাত্রী সাধারণ নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ যাত্রা যেন করতে পারে এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
জানা যায়, কমলাপুর স্টেশন থেকে লোকাল-আন্তঃনগর মিলে ৫২ জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া রয়েছে এক জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন। আর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আরও দুই জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে আজ থেকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১৪ জুন বিক্রি করা হয় ২৪ জুন ভ্রমণের টিকিট, ১৫ জুন বিক্রি হয় ২৫ জুন ভ্রমণের টিকিট, ১৬ জুন বিক্রি করা হয় ২৬ জুন ভ্রমণের টিকিট, ১৭ জুন বিক্রি করা হয় ২৭ জুন ভ্রমণের টিকিট এবং ১৮ জুন বিক্রি করা হয় ২৮ জুনের অগ্রিম টিকিট। একইভাবে ঈদযাত্রার ট্রেনের ফিরতি অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় ২২ জুন থেকে। ২২ জুন বিক্রি করা হয় ২ জুলাই ভ্রমণের টিকিট, ২৩ জুন বিক্রি করা হয় ৩ জুলাইয়ের টিকিট, ২৪ জুন বিক্রি করা হয় ৪ জুলাইয়ের টিকিট, ২৫ জুন বিক্রি করা হয় ৫ জুলাইয়ের টিকিট এবং ২৬ জুন বিক্রি করা হয় ৬ জুলাই ভ্রমণের টিকিট।
গত ঈদের মতো এবারও ট্রেনের অগ্রিম টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হয়। তবে এবারের ঈদে অনলাইনে দুই ভাগে দেওয়া হয় অগ্রিম টিকিট। ঈদযাত্রায় পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা সব আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে পাওয়া যায় সকাল ৮টা থেকে। আর দুপুর ১২টা থেকে পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয়। আর আসনবিহীন বা স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি হচ্ছে মোট আসনের ২৫ শতাংশ। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর ও জয়দেবপুর স্টেশন থেকে এসব টিকিট পাওয়া যাবে। শুধু যাত্রা শুরুর দিন আসনবিহীন টিকিট স্টেশনের কাউন্টার থেকে কেনা যাচ্ছে।
সারাবাংলা/জেআর/এনএস