গাবতলী হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি, অর্ধেকই ফেরতের আশঙ্কা
২৮ জুন ২০২৩ ২৩:৩৭
ঢাকা: কোরবানির হাটের শেষ দিন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একমাত্র স্থায়ী গরুর হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি। ফলে পড়ে গেছে পশুর কাঙ্ক্ষিত দাম। সন্ধ্যায় হাট ঘুরে দেখা গেল অনেকেই গরু নিয়ে ফেরত যাচ্ছেন। হাসিলঘরের লোকজনও বলছেন একই কথা।
কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গরু পালায় খরচ বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত কম দামে গরু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থেকে দুটি গরু নিয়ে সোমবার রাতে গাবতলী হাটে এসেছেন আশিক। বাড়িতে দুটি গরুর দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা উঠলেও বেশি দামের আশায় গাবতলী এসেছিলেন। আশা ছিল চার লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু এখন আড়াই লাখও দাম উঠছে না দুটি গরুর। একটি বিক্রি করেছেন এক লাখ ষাট হাজারে। আর অন্যটি এক লাখ বিশ হাজারের উপর দাম উঠেছে না। এখ প্রায় লাখ খানেক টাকা গচ্চা দিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন তিনি।
এভাবে নাটোরের বনগাঁও থেকে দুটি গরু নিয়ে এসেছিলেন হারুনুর রশীদ। ক্রস জাতের গরু দুটি আড়াই লাখে বিক্রির ইচ্ছা ছিল। একটি করে বিক্রি করলে এক লাখ তিরিশ বা পঁয়ত্রিশে বিক্রি করবেন। কিন্তু এখন ক্রেতা পাচ্ছেন না। গতকাল থেকে লোকজন দশ থেকে পনেরো হাজার টাকা কম বলছে। দামে না পোষালে ফিরে যাবেন কিন্তু এক লাখ বিশের নিচে গরু বিক্রি করবেন না তিনি।
জামালপুরের মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ ছয়টি গরু নিয়ে এসেছিলেন গাবতলী হাটে। পাঁচটি গরু বিক্রি করেছেন গত দুইদিনে এক লাখ বিশ হাজার বা তিরিশ হাজারে। আজ এক লাখের গরু পঞ্চাশ বা ষাট হাজারেই ক্রেতা পেলে ছেড়ে দেবেন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে একদল কিনেছেন মহিষ। দুই লাখের মহিষ এক লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকায় কিনে তারা খুবই খুশি।
জামালপুরের সুজন তিনদিন আগে গাবতলী হাটে এসেছিলেন চারটি গরু নিয়ে। একটি বিক্রি করেছেন আশি হাজারে। একটি নব্বই হাজার, একটি পঁচানব্বই আর একটি এক লাখ দশ হাজারে। প্রতিটি গরুই দশ থেকে পনেরো হাজার টাকা কমে ছেড়েছেন। ঈদের আগে বেশি দাম পাওয়ার আশায় রেখে দিয়েছিলেন কিন্তু ঈদের আগেরদিন ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি থাকায় এভাবে দাম পড়ে যাবে ভাবেননি।
হাসিলঘরে কথা বলেও জানা গেল গরু বেশি থাকায় গতকাল থেকে বিক্রি পড়ে গেছে হুট করেই। ইজারাদারের ম্যানেজার আবুল হোসেন বলেন, আজ বিক্রি ভালো হয়নি, গতকাল ভালো ছিল। তার আগেরদিনও ভালো ছিল। গতকাল হাটে গরু ছিল নয় হাজার প্লাস। এর অর্ধেকও আজ বিক্রি হবে না। অর্ধেকের বেশিই ফেরত যাবে। বৃষ্টি আসায় ক্রেতারা অন্য হাটে গেছে।
তবে সারাদিন কয়টি গরু বিক্রি হয়েছে সেই তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। শুধু জানান, এবার ব্যবসা ভালো হয়নি।
গাবতলী হাটে দশ থেকে পনেরো হাজার বিক্রি হচ্ছে না। কিন্তু ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি থাকায় বিক্রি অনেক কম। তাই ব্যবসায়ীরা দরকার হলে ফেরত যাচ্ছেন কিন্তু লোকসানে বিক্রি করছেন না।
সারাবাংলা/আরএফ/একে