চামড়া পাচার ঠেকাতে শার্শা-বেনাপোল সীমান্তে সতর্কতা
২৯ জুন ২০২৩ ০৮:৪৮
বেনাপোল: যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্ত পথে ভারতে চামড়া পাচার ঠেকাতে সতর্কতা জারি করেছে ৪৯ ও ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন। এরইমধ্যে সীমান্তের অনেক স্পর্শকাতর পয়েন্টে বৃদ্ধি করা হয়েছে বিজিবির নজরদারি ও লোকবল। বন্দর এলাকাসহ স্থল ও রেলপথে ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিজিবির পাশাপাশি সতর্ক রয়েছে পুলিশ বাহিনীও।
সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে এবার চামড়া পাচার হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রসাশন।
এদিকে পুঁজি সংকটে চাহিদা মত চামড়া কিনতে পারছেন না চামড়া ব্যবসায়ীরা। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের পশুর চামড়ার গুণগত মান উন্নত তাই ভারতে এদেশের চামড়ার দাম এবং চাহিদা দুটোই বেশি। এ কারণে বেশি লাভের আশায় ভারতে সীমান্ত পথে চামড়া পাচারের প্রবণতা থেকে যায় অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে। বিগতদিনে যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্তে কোরবানী পশুর চামড়া ভারতে পাচারকালে আটকের ঘটনাও ঘটেছে বহুবার। চোরাকারবারিরা সাধারণত পণ্য আনা নেওয়ায় জন্য বেনাপোলের পুটখালী, গোগা, কায়বা, অগ্রভুলোট, রুদ্রপুর, দৌলতপুর, গাতিপাড়া, ঘিবা, সাদিপুর, বড় আঁচড়া, কাশিপুর ধাণ্যখোলা ও রঘুনাথপুর সীমান্ত পথ ব্যবহার করে থাকে। এ কারণে এ এলাকা দিয়ে চামড়া পাচারের ঝুঁকি থাকায় নজরদারিও বাড়িয়েছে বিজিবি।
শার্শার চামড়া ব্যবসায়ী আক্তার ও তারিকুল ইসলাম তাদের পুঁজির স্বল্পতার কথা জানিয়ে বলেন, ‘চাহিদামত চামড়া কিনতে পারবো কিনা তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি। এবারের ঈদে সরকার ঢাকায় বাইরে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে ৪৫/৪৮ টাকা। ছাগলের চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ থেকে ১৪ টাকা প্রতি বর্গফুট। গ্রামে গ্রামে ঘুরে চামড়া কিনলে অন্যান্য খরচ করে লাভ হবে না। তবে চামড়ার মূল্য আর একটু বেশি হলে ভালো হতো।’
শার্শা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এস এম আকিকুল ইসলাম ও বেনাপোল পোর্ট থানা কামাল হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘দেশে চামড়ার মূল্য ভারত অপেক্ষা কম থাকায় সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচারের সম্ভাবনা থাকে। ফলে পাচাররোধে পুলিশ সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে চামড়ার বাজারদর বেশি সেজন্য ব্যবসায়ীরা যাতে চামড়া পাচার করতে না পারে সেদিকে পুলিশের সর্বোচ্চ নজরদারি আছে।’
যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল বলেন, ‘কোরবানি ঈদে চামড়া পাচাররোধে এবার সীমান্তে বিশেষ বিশেষ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব পয়েন্টে বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে অবৈধপথে চামড়া পাচার না হতে পারে। এছাড়া শহর থেকে যাতে চামড়া সহজেই সীমান্তে পৌঁছাতে না পারে সে জন্য বিজিবি চেকপয়েন্টগুলোতে নজরদারি জোরদার করা করেছে। এছাড়াও বিজিবির নিজস্ব গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘বিজিবি প্রথম থেকেই যেকোনো পাচার প্রতিরোধে সতর্ক রয়েছে। তবে কোরবানি পশুর চামড়া যাতে পাচার না হয় তাই আগামী ২৯ জুলাই থেকে সীমান্তে বিজিবি নজরদারি বাড়াবে। এছাড়া অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে পাচার প্রতিরোধে কাজ করবে।’
খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর রহমান বলেন, ‘কোরবানির চামড়া এবার পাচার হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কারণ বিজিবি টহল টিম জোরদার আছে। স্পর্শকাতর ঘাটগুলোতে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও