Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘোষিত সময়েই বর্জ্যমুক্ত চট্টগ্রাম শহর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৯ জুন ২০২৩ ১৯:৫৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘোষিত সময়ের মধ্যেই কোরবানির বর্জ্য প্রায় অপসারণ করে চট্টগ্রাম নগরীকে মোটামুটি পরিচ্ছন্ন করতে সক্ষম হয়েছে সিটি করপোরেশন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিকেল ৫টার মধ্যে ৯৫ ভাগ বর্জ্য তারা অপসারণে সক্ষম হয়েছে। শেষ মুহূর্তে যেসব বর্জ্য ফেলা হচ্ছে, সেগুলো অপসারণে সার্বক্ষণিক টহল টিম কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে পাড়া-মহল্লার অলিগলি থেকে কোরবানির বর্জ্য ও পুরনো খড়কুটোসহ বিভিন্ন আবর্জনা সংগ্রহ শুরু করেন সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। এক ঘণ্টার মধ্যে সেগুলো নিয়ে সড়কে নির্ধারিত স্থানে জমা করতে শুরু করেন। সকাল ৯টার পর থেকে ট্রাকে বর্জ্য আবর্জনাগারে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানি ও ব্লিচিং পাউডার ছিটান শুরু করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বিকেল ৫টার মধ্যে পুরনো এবং কোরবানি মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মোবারক আলী।

কাউন্সিলর মোবারক আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে কাজ শুরু করে আমরা বিকেল ৫টার মধ্যে ৯৫ ভাগ বর্জ্য অপসারণ করেছি। এর আগে এক ঘণ্টা আমরা শুধুমাত্র বিভিন্ন সড়ক, অলিগলি থেকে খড়কুটো, গরুর মলমূত্র অপসারণ করেছি। সকাল ৯টার পর থেকে মূল কাজ শুরু হয়েছে। কারণ জবাই করা পশু প্রসেস হয়ে বর্জ্য পেতে কিছুটা সময় লাগে। পুরনো বর্জ্য ২ হাজার টন এবং কোরবানির ৭ হাজার টনসহ আমরা মোট ৯ হাজার টন বর্জ্য অপসারণের টার্গেট নিয়েছিলাম। বিকেল ৫টার মধ্যে অলমোস্ট ৯৫ শতাংশ সংগ্রহ করে আমরা ডাম্পিংয়ে নিয়ে গেছি।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বিকেল ৫টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য শতভাগ অপসারণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়র রেজাউল নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম দেখেন।

বিজ্ঞাপন

নগরীর আলমাস মোড়ে সাংবাদিকদের মেয়র বলেন, ‘আমরা বিকেল সাড়ে তিনটার মধ্যে নগরীর ৮০ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি। দুপুর ২টার মধ্যে যেসব পশু কোরবানি হয়েছে, সেগুলোর বর্জ্য আমরা ৫টার মধ্যে অপসারণ করেছি। কিন্তু অনেকে দুপুর ২টার পরেও কোরবানি দিয়েছেন। আবার কিছু প্রান্তীয় এলাকায় পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা কিছুটা কঠিন। এসব এলাকায় এবং নগরীর সব অলিগলি সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে পরিষ্কার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

এসময় মেয়রের সঙ্গে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবদুস সালাম মাসুম, পুলক খাস্তগীর, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার বিকেলে নগরীর টাইগার পাস, কদমতলী, আমবাগান, চৌমুহনী এলাকার মূল সড়কগুলো ঘুরে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায়নি। সড়কগুলো অনেকটাই পরিচ্ছন্ন দেখা গেছে। তবে কিছু অলিগলিতে গরুর মাথার বিচ্ছিন্ন অংশ, জিহ্বার অংশ, রক্ত, লেজের অংশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। রক্তমাখা চাটাইও পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, ‘বিক্ষিপ্তভাবে যেসব বর্জ্য এখনও ফেলা হচ্ছে সেগুলো অপসারণের জন্য আমাদের টহল টিম আছে। কোথাও বর্জ্য পেলেই সেটা অপসারণ করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে মূল যে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম সেটা আমাদের শেষ বলা যায়।’

চসিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৩৪৫টি গাড়ি নিয়ে চসিকের নিজস্ব ৪০০ শ্রমিকসহ মোট ৪৭০০ কর্মী বর্জ্য অপসারণে কাজ করেছেন। তদারকিতে ছিলেন ১১০ জন কর্মকর্তা।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নগরীকে ছয়টি জোনে ভাগ করে দু’জন কাউন্সিলর মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। নগরীর উত্তর-দক্ষিণের ২২টি ওয়ার্ডের বর্জ্য ফেলা হয়েছে নগরীর আরেফিন নগরের আবর্জনাগারে। পতেঙ্গা-বন্দর এলাকার বাকি ১৯টি ওয়ার্ডের বর্জ্য ফেলা হয়েছে হালিশহরে আবর্জনাগারে।

সারাবাংলা/আরডি/আইই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর