বুড়িগঙ্গায় মর্নিং বার্ড লঞ্চডুবির ৩ বছরেও শেষ হয়নি বিচার
৩০ জুন ২০২৩ ০৯:১৫
ঢাকা: ২০২০ সালে ২৯ জুন সদরঘাটের শ্যামবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ মর্নিং বার্ড ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার ঘটনায় মর্নিং বার্ডের ৩৪ যাত্রী মারা যায়। এ ঘটনায় ময়ূর-২ লঞ্চের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করে নৌ-পুলিশ। তবে মামলা দায়েরের ৩ বছরেরও বিচার শেষ হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষ আশাবাদী সাক্ষীরা ঠিকমত সাক্ষ্য দিতে এলে এই বছরই মামলার বিচার শেষ হবে।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালতে বিচারাধীন। সর্বশেষ গত ৬ জুন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমাদ্দার বলেন, ‘মামলাটি নিয়ে আমরা খুবই সিরিয়াস। মামলাটি যেন দ্রুত শেষ করা যায় আমরা সেই চেষ্টাই করছি। ইতিমধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। সাক্ষ্যে একটা বিষয় মোটামুটি উঠে এসেছে ময়ূর-২ লঞ্চটি দ্রুতগতিতে ঘাটে যাওয়ার সময় মর্নিং বার্ডকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দিয়েছে। এ কারণে এতগুলো প্রাণ গেছে। সাক্ষীরা এভাবে এলে এ বছরই মধ্যে মামলার বিচার শেষ হবে বলে আশা করছি। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো যেন ন্যায়বিচার পায় সে লক্ষ্যে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছি।’
এদিকে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ ছোয়াদের আইনজীবী সুলতান নাসের বলেন, ‘মোসাদ্দেক হানিফ তো লঞ্চের মালিক। মালিক তো আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। মালিকের অপরাধ, উনি লঞ্চের মালিক। উনার সনদ আছে, তারপরও মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে। ট্রায়াল ফেস করছি। আশা করি সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সক্ষম হবো।’
২০২০ সালের ২৯ জুন মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ সদরঘাটে পৌঁছানোর আগে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। দুর্ঘটনায় মর্নিং বার্ডের ৩৪ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পরের দিন ৩০ জুন রাতে নৌ-পুলিশের সদরঘাট থানার এসআই মোহাম্মদ শামসুল বাদী হয়ে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট নৌ-থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল আলম ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। গত বছরের ১৮ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এখন পর্যন্ত ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ ছোয়াদ, মাস্টার আবুল বাশার মোল্লা, সহকারী মাস্টার জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন, সুকানি নাসির হোসেন মৃধা, গিজার হৃদয় হাওলাদার, সুপারভাইজার আব্দুস সালাম, সেলিম হোসেন হিরা, আবু সাঈদ ও দেলোয়ার হোসেন সরকার।
আসামিদের মধ্যে আবুল বাশার, নাসির হোসেন, শাকিল হোসেন, জাকির হোসেন ও শিপন হাওলাদার কারাগারে আছেন। অপর ২ আসামি জামিনে রয়েছেন।
সারাবাংলা/এআই/এমও