জয়পুরহাটে চামড়া বাজারে ধস, বিপাকে ব্যবসায়ীরা
৩০ জুন ২০২৩ ১৪:৩৫
জয়পুরহাট: জেলায় গত বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। এলাকা থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় চামড়া কিনে গাড়ি ভাড়াও তুলতে পারছেন না মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। ফলে বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেক জায়গায় এই দামে বিক্রি না হওয়ায় অবহেলায় মাটিতে লুটাচ্ছে কোরবানির চামড়া।
মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকারি নীতিমালা তোয়াক্কা না করেই সিন্ডিকেট করে নিজেদের ইচ্ছে মতো চামড়া কিনছেন আড়তদাররা, তাই চামড়া বাজারে এই ধস। ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, এবার বাজারে প্রতিটি গরু চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া কেনার আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। জয়পুরহাট সদর উপজেলার সুক্তাহার গ্রামের মতিউর রহমান, কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের গোলাম রব্বানী, ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া গ্রামের হানিফ হোসেনসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার কোরবানি দেওয়া ব্যক্তিরা জানান, গত বছরের মতোই এবারও চামড়া দাম নেই।
চামড়ার বাজার ধসের কারণে লোকসানের শিকার জেলার প্রায় সব মৌসুমি ব্যবসায়ী। শহরের নতুনহাট এলাকার শহিদুল ইসলাম, জামালগঞ্জ বাজারের মতিউর রহমানসহ কয়েজন মৌসুমি ব্যবসায়ী জানান, হঠাৎ করে কোরবানির চামড়ার দরপতনে দিশেহারা তারা। ফলে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ফড়িয়া জানান, সীমান্তে কড়াকড়ি না থাকলে তারা ওপারে চামড়া পাঠিয়ে কিছু লাভের মুখ দেখতেন। এবার সেটিও হচ্ছে না। পুঁজি সংকট ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনাসহ নানা কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে।
জয়পুরহাট শহরের চামড়া ব্যবসায়ী গোলজার হোসেন ও শাহিন আকতার বলেন, ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা রয়েছে কোটি কোটি টাকা। হাতে টাকা না থাকায় তারা কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে চামড়া কিনতে পারছেন না। ফলে বাজারে চাহিদা কম, তাই চামড়ার মূল্য কমে গেছে। এছাড়া চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। এতে করে দেশের স্থানীয় বাজারে আপাতত চামড়া কেনাবেচা করতে হচ্ছে- এটাও চামড়ার দাম কমার কারণ।
জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল ইসলাম জানান, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে সীমান্ত এলাকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকা তারকাঁটার ঘেরা, বাকি ১৮ কিলোমিটার সীমান্তে তারকাঁটা নেই। চোরাকারবারিরা মূলত এই জায়গাটিকেই তাদের পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই এই জায়গাগুলো সব সময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। চামড়া পাচার রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।