ঢাকা: ঢাকার আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় নিখোঁজের পর বস্তাবন্দি উদ্ধার হওয়া আড়াই বছরের শিশু হুমায়রা চিকিৎসাধীন মারা গেছে। শুক্রবার (৩০ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) মো. মাসুদ মিয়া। তিনি জানান, গত ২৪ জুন রাতে আশুলিয়া এলাকা থেকে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার শিশুটি মারা যায়।
শিশুটির বাবা আজিজুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের ২২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল শিশু হুমায়রা। গত ২৪ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হয়। ওইদিন রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেলে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট সে।
আজিজুল নিজে সবজি বিক্রেতা। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তারাইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামে।
আজিজুল ইসলাম জানান, ওইদিন সকাল ১০টার পর থেকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না শিশুটিকে। পরে বিষয়টি পরিবারের সবাই জানাজানি হলে এলাকাতে মাইকিং করে নিখোঁজের সন্ধান চাওয়া হয়।
ওই এলাকার ইডনাইট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষক জয়নাল আবেদিন তুহিন জানান, ২৪ জুন বেলা আড়াইটার দিকে এক পথশিশু স্কুলের পিছনের গলিতে প্লাস্টিকের বোতল কুড়াতে ঢুকলে সে একটি প্লাস্টিকের বস্তা দেখতে পায়। তখন সেটি খুলে ভিতরে ওই শিশুকে দেখতে পায়। সে আশপাশের লোকজনকে ডাকলে সেখানে গিয়ে তারা দেখেন, বস্তার ভেতর অচেতন অবস্থায় একটি মেয়ে শিশু। তার গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগানো। তারা ধারণা করেন, মারা গেছে শিশুটি। বস্তা থেকে বের করে বাইরে এনে তার মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দেওয়া হয় নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে। কিছুক্ষণ পর তার বাবা-মা খবর পেয়ে সেখান থেকে শিশুটিকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে।
শিশুটির বাবা আজিজুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, তাদের বাড়ির পাশেই শাহিনা নামে এক নারীর সঙ্গে প্রায় সময় তাদের পরিবারের ঝগড়া হতো। এর আগে শিশুটির পরিবারের আত্মীয় অন্য দুই শিশু শাহিনার কাছে গিয়ে পৃথক দুই দিন শরীরে ছ্যাঁকা লাগে। এটি নিয়ে শাহিনার সঙ্গে তাদের ব্যাপক ঝগড়া হয়। পরিবারটির সন্দেহ, সেই ঝগড়া কেন্দ্র করেই শাহিনা শিশু হুমায়রাকে হত্যা করার জন্য গলায় গামছা পেঁচিয়ে বস্তায় ভরে চিপা গলিতে ফেলে রাখতে পারে।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম জানান, বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে শিশুর মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি আশুলিয়া থানা পুলিশ তদন্ত করছে।