ঢাকা: মশা নিধন অভিযানের বেলায় কাউকে বিশ্বাস করেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযানে আমি কোথায় যাব তা সম্পর্কে কেউ কিছুই জানেন না। আমি কাউকে বিশ্বাস করি না। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাব। আপনারা (সাংবাদিকরা) আমার সঙ্গে আসেন।’
শনিবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবন থেকে মোহাম্মদপুর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের জাপান গার্ডেন সিটিতে মশা নিধন অভিযান শুরুর আগে মেয়র এ সব কথা বলেন।
ডিএনসিসির শুরু হওয়া মাসব্যাপী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান চলছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একযোগে শুরু হওয়া অভিযানে আজ সকালে ঝটিকা পরিদর্শন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
অভিযান শুরু হয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মোহাম্মদপুর ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে জাপান গার্ডেন সিটির কয়েকটি বহুতল ভবনের বেইজমেন্ট দেখেন মেয়র। তিনটি ভবনের বেইজমেন্টে গিয়ে প্রতিটিতেই গাড়ি ধোয়ার পর জমে থাকা পানিতে এডিস মশার অসংখ্য লার্ভা দেখতে পান তিনি। জীবন্ত মশাও সেখানে ওড়াউড়ি করছিল।
মেয়র এসময় জাপান গার্ডেন সিটি ফ্ল্যাট ওনার্স কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান, এখানে এত মশা কীভাবে এল? সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান বলেন, ‘আমরা নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি। কিন্তু সিটি করপোরেশনের লোকজন কখনও মশা মারতে আসে না।’
নিয়মিত পরিষ্কার করলে মশার লার্ভা কীভাবে জমল- মেয়রের এই প্রশ্নে কোনো উত্তর দেননি শহীদুর রহমান। তখন আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনের ভেতরে জমে থাকা পানি সিটি করপোরেশন পরিষ্কার করবে না। এসব ভবনে আমাদের কর্মীরা ঢুকতে পারে না। শুধু এই এলাকা না ঢাকার অনেক ভবনে, বাড়িতে আমাদের কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।’
এরপর এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় জাপান গার্ডেন সিটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রচুর এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এ কারণে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে কল্যাণ সমিতির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদককে তিন মাসের কারাদণ্ড হবে।’
এর আগে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। সচেতনতা বাড়াতে আমরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিএনসিসির মেয়রের নির্দেশে শনিবার থেকে মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে মশার উৎসস্থল ধ্বংস করা হবে। এডিসের লার্ভা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেবেন ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
ডিএনসিসির মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন অভিযানের প্রথম দিনে দশটি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে লার্ভা পাওয়ায় ১৭টি মামলায় মোট ১৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।