ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি বছরের সর্বোচ্চ রোগী
৮ জুলাই ২০২৩ ২১:২৯
ঢাকা: দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে শুক্রবার (৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত ৮২০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬০৩ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২১৭ জন।
এ ছাড়া এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে দেশে চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ৬৭ জনের মৃত্যু হলো।
শনিবার (৮ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট দুই হাজার ৫০২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে এক হাজার ৭৭৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
সারাদেশে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ১১৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় আট হাজার ৫৭৪ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন তিন হাজার ৫৪৪ জন।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ৫৪৯ জন। ঢাকায় ছয় হাজার ৭৫০ এবং ঢাকার বাইরে দুই হাজার ৭৯৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এর আগে, চলতি মৌসুমের ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী গতবছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮১ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২ হাজার ৩৮২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বাইরে ছিলেন ২৩ হাজার ১৬২ জন।
প্রস্তুত আরও ২ হাসপাতাল: রাজধানীর সব সরকারি হাসপাতালেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে বর্তমানে রাজধানীর মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আরও দুইটি হাসপাতালে আলাদা ডেঙ্গু আক্রান্ত ওয়ার্ড খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে। আর তাই সরকারিভাবে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় শয্যাসংখ্যার পাশাপাশি ওয়ার্ডও বাড়ানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এরইমধ্যে অনেক রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালটির ফ্লোরেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে আর এমন অবস্থায় প্রচুর চাপ বেড়েছে সেখানে। এতে করে চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সেবা দেওয়াতে অনেক ক্ষেত্রে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে অন্যান্য হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কম আছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সম্পূর্ণ প্রস্তুত রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য। এ ছাড়া কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সেবা এরইমধ্যে দেওয়া হচ্ছে। তবে যদি রোগীরা শুধুমাত্র এক হাসপাতালে না গিয়ে এসব হাসপাতালেও যায় তবে চিকিৎসাসেবা দেওয়াটা তুলনামূলকভাবে সহজ হবে।’
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ অনেক আগে থেকেই বেশি। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি সেবা দিয়ে যাওয়ার জন্য।’
সারাবাংলা/এসবি/একে