আরপিও সংশোধনে ইসির ক্ষমতা খর্ব হয়নি: আইনমন্ত্রী
৯ জুলাই ২০২৩ ২২:০২
ঢাকা: নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আরপিও সংশোধন করে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
রোববার (৯ জুলাই) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ/সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। অবাস্তব কোনো দাবি নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আরপিও সংশোধন করে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। এর মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে।’
বিএনপি নেতাদের মামলা নিষ্পত্তির জন্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে– বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আনিসুল হক বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন। আমরা এরকম কোনো পত্র লিখি না। তারা যদি এরকম কোনো পত্র দেখাতে পারেন, তাহলে সেটা নিয়ে বাহাস হবে। আমার মনে হয়, তারা এখন অন্য ইস্যু খুঁজে না পেয়ে মিথ্যা ইস্যু বানানোর জন্য অনেক সচেষ্ট।’
সহকারী জজদের চার মাস ব্যাপী ৪৮তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব ইতিহাসও বলে, যে জাতি যত বেশি জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছে, সে জাতি তত উন্নতি লাভ করতে পেরেছে। তাই জ্ঞান ও দক্ষতাই শক্তি এবং জ্ঞান ও দক্ষতাই সুপার পাওয়ার- এই বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার জ্ঞান ও দক্ষতা ভিত্তিক মানবসম্পদ গড়ে তুলতে শুরু থেকেই শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। ফলে দেশের সব সেক্টরে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের পরিধি যেমন প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি দক্ষ জনবল তৈরি হচ্ছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের উৎপাদন ও সেবা খাতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের যুগান্তকারী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলেই এখন বিচারক তথা বিচার বিভাগের দক্ষতা ও সক্ষমতা অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেড়েছে, যার সুফল আমরা এরইমধ্যে পেতে শুরু করেছি।’
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘নব্য বিশ্বায়নের যুগে প্রতিনিয়ত বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির বিকাশ ঘটছে; সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন ঘটছে। এই পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হলে বিচারকদের সবসময় নতুন নতুন আইন, জুডিসিয়াল ডিসিশন, পরিবর্তিত কর্মপরিধি ও কর্মপরিবেশ সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে হবে। জ্ঞান, দক্ষতা ও সামর্থ্য উন্নয়নের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়িয়ে ভালোভাবে প্রস্তুত হতে হবে। কেননা স্বল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে বিচারপ্রার্থীদের জন্য মানসম্পন্ন ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা বিচারকদের অন্যতম দায়িত্ব। তাছাড়া বিচার প্রশাসনে গতিশীলতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করাও বিচারকদের দায়িত্ব। এসব ক্ষেত্রে জ্ঞান অর্জনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার প্রশিক্ষণ।’
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রশিক্ষণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। একজন বিচারক একবার প্রশিক্ষণ নিয়ে সারা জীবন বিচারকাজ করবেন, এমনটি হওয়া উচিত নয়। সেজন্যই বিচারকদের দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যার যাত্রা শুরু করা হয় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে। নবীন বিচারকদের জন্য এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তব্য দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে