খাদিজার বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানি ৩০ নভেম্বর
১১ জুলাই ২০২৩ ১৩:১৯
ঢাকা: জগন্নাথের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় চার্জগঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ৩০ নভেম্বর ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) মামলাটির চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে এদিন খাদিজার পক্ষে আইনজীবীরা মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে জানিয়ে চার্জগঠন শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালত আগামী পরবর্তী চার্জগঠন শুনানির জন্য নতুন করে এই তারিখ ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, মামলাটি দুইটি চার্জগঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে মামলা দু’টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় পরবর্তী চার্জগঠনের জন্য নতুন করে এই তারিখ ধার্য করেন।
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা দুটি মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একই রকম।
একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ হোসেন। দুই বাদীই দায়িত্ব পালনকালে মোবাইলফোনে ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর দুজনই নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।
নিউমার্কেট থানার মামলায় ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মোবাইলফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।
নিউমার্কেট থানায় মামলা করার আট দিনের মাথায় কলাবাগান থানায় আরেকটি মামলা করেন এসআই আরিফ হোসেন। কলাবাগান থানার মামলার এজাহারেও উল্লেখ করা হয়, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর রাত ৯টা ১৫ মিনিটে মোবাইলে ইউটিউব দেখার সময় দেলোয়ার হোসেনের ইউটিউব চ্যানেল দেখতে পান। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি থানায় মামলা করেন। দুই মামলার অভিযোগের ভাষ্য প্রায় একই রকম।
জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট খাদেজার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার জজ আদালত। এরপর গত ১০ জুলাই এই দুই মামলায় তার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি করা হয়েছে। এ সময়ে তার জামিন স্থগিত থাকবে।
সারাবাংলা/এআই/ইআ