মশার বাসা খুঁজতে আরও ড্রোন ওড়াবেন চসিক মেয়র
১১ জুলাই ২০২৩ ২১:৩৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মশার আবাস খুঁজতে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। সম্প্রতি মশার বাসা খুঁজতে চসিকের ড্রোন ওড়ানো নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে মেয়রের এ ঘোষণা এলো।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) নগরীর আন্দরকিল্লার পুরাতন নগর ভবনের কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের উদ্যেগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মেয়র এ কথা জানান। গত রোববার নগরীতে মশা নিধনের কর্মসূচিতে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্বোধন করেছিলেন মেয়র।
মেয়র রেজাউল বলেন, ‘ড্রোনের কারণে প্রতিটি বাড়িতে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠতে হচ্ছে না। খুব অল্প সময়েই অনেকগুলো বাড়ির ছাদে মশা জন্মানোর মতো পানি আছে কি না তা খুঁজে বের করা যাচ্ছে। এ সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভবিষ্যতে মশার আবাসস্থল নির্ধারণে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হবে। পাশাপাশি মশা নিধনে ঔষধ ক্রয় ও প্রয়োগেও বিশেষজ্ঞ মতামত এবং প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মশার জীবনপদ্ধতি বদলে যাচ্ছে, তাই মশা নিধনে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করলে সাধারণ মানুষের সুবিধা হয়।‘
চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, ‘জ্বর দেখা দেওয়ায় ব্যথানাশক ওষুধ খেলে ডেঙ্গু আরও মারাত্মক রূপ ধারণ করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যাবে না।’
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামের সবগুলো স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ডেঙ্গুর জন্য বিশেষায়িত সেবা চালু করতে হবে।’
চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, ‘চসিকের পক্ষে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা সেবা দেওয়া হচ্ছে। আমরা একদিনে ৬০ জনের পরীক্ষা করে মাত্র চার জন ডেঙ্গু আক্রান্ত পেয়েছি। সুতরাং আতঙ্কিত না হয়ে লক্ষণ দেখা দিলেই টেস্ট করুন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করলে ডেঙ্গু ভালো হয়।’
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম বলেন, ‘চট্টগ্রামে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে ম্যালেরিয়া ও মশক নিধন কর্মকর্তা নিয়োগ করে পৃথক শাখা গঠন করা হয়েছে এবং শাখায় লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে।’
তিনি জানান, চসিকে বর্তমানে ১০ হাজার লিটার এডাল্টিসাইড ও তিন হাজার লিটার লার্ভিসাইড মজুদ রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা টিমের সুপারিশের আলোকে মসকুবান নামের ভেষজ ওষুধ ব্যবহার শুরু হয়েছে।
পাঁচ হাজার লিটার ন্যাপথা মজুদ রয়েছে। এডাল্টিসাইড হিসেবে ইনভেন্ট লিকুইড ইনসেক্টিসাইড, লার্ভিসাইড হিসেবে টেমিফস ৫০ ইসি ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ এলডিও এবং এইচএসডি (কালো তেল) কেনা হচ্ছে।
গত ৫ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত নির্মাণাধীন বাড়ির নিচতলা ও ছাদ, ছাদবাগান এবং বিভিন্ন বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের পরিত্যক্ত স্থানে পানি জমে থাকায় চসিকের চারটি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১৯ জনকে প্রায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম