একদফা দাবিতে ১৮ ও ১৯ জুলাই বিএনপির পদযাত্রা
১২ জুলাই ২০২৩ ১৮:৫৩
ঢাকা: সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঢাকায় দুই দিনের পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বুধবার (১২ জুলাই) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ১৮ জুলাই ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে মহানগরে এবং ১৯ জুলাই শুধু ঢাকা মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। ১৮ জুলাই সকাল ১০টায় গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এবং ১৯ জুলাই আব্দুল্লাহপুর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ, বিদ্যমান সংসদের বিলুপ্তি, নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা-গায়েবি মামলা প্রত্যাহার, ফরমায়েশি সাজা বাতিল, সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি, ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার একদফা দাবিতে রাজপথে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক জোট ও দলগুলোর যুগপৎ ধারায় ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলা ও সফল করার একদফা ঘোষণা করা হলো।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলছেন- এ কর্মসূচি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কর্মসূচি। এটা ঠিক নয়। এ কর্মসূচি ১৮ কোটি জনগণের আশা-ভরসার স্থল, যিনি সুদূর ১২শ’ কিলোমিটার দূরে লন্ডনে নির্বাসিত জীবন-যাপন করছেন, সেই তারুণ্যের অহংকার, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কর্মসূচি।’
‘এ কর্মসূচি বিএনপির সঙ্গে এতদিন ধরে যারা যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, কথা বলে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সুতরাং এ কর্মসূচি তাদেরও কর্মসূচি। এ কর্মসূচি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী ১৮ কোটি মানুষের কর্মসূচি’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে যৌথ কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এ সমাবেশ আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি। দুপুর ২ টায় এ সমাবেশ শুরু হওয়ার চার ঘণ্টা আগেই বিএনপির নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা সমাবেশ স্থলে হাজির হন।
দুপুর ১২ টার পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড, অঙ্গ ও সাহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিট, ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলা ও পৌরসভা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা ব্যানার, ফেস্টুন, ডিসপ্লে কার্ড, হেডার, জার্সি, পোস্টার, ধানের শীষ, ধানের শীষের রেপ্লিকা, ক্ষুদ্রবাদ্যযন্ত্র, ক্যাপ, টি-শার্ট, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে করে, গায়ে জড়িয়ে সামবেশ স্থলে এসে হাজির হয়েছেন। তারা তাদের নেত্রীর মুক্তি, নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার, দ্রব্যমূল্য কমানো, সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধয়াকের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে স্লোগান দেন এবং মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতারা দেন বক্তব্য।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, আহমেদ আজম খান, বরকত উল্লাহ বুলু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উদেষ্টা আবদুস সালাম, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবীব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
বিএনপি ছাড়াও বিকেল ৪টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে গণতন্ত্র মঞ্চ, বিকেল ৩টায় ডিআরইউ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে ১২ দলীয় জোট, বিজয়নগর পানির ট্যাংকসংলগ্ন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এফডিসিসংলগ্ন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এলডিপি, মতিঝিল নটরডেম কলেজের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে গণফোরাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে গণঅধিকার পরিষদ (নুর) ও গণঅধিকার পরিষদ (রেজা) গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ‘একদফা’ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম