Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার-রিমান্ড, রায়ের নির্দেশনা স্থগিত হয়নি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ জুলাই ২০২৩ ১৮:০৯

ঢাকা: বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনার বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। একই বিষয়ে আরও অধিকতর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনা স্থগিত করেননি আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক।

পরে আইনজীবী অনীক আর হক জানান, রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগের ১৫ দফা নির্দেশনার মধ্যে ছয় দফা নির্দেশনা বাতিল চেয়েছেন। সে বিষয়ে আজ শুনানি হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত রিভিউ আবেদনের অধিকতর শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন। তবে এ সময় পর্যন্ত নির্দেশনাগুলো স্থগিত করেননি।

এর আগে, গত ৫ জানুয়ারি আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন দুই সপ্তাহের সময় আবেদন করেন। তখন আদালত ১৯ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ঠিক করেছিল। কিন্তু এরপর দীর্ঘ সময় পর আজকে শুনানি হয়।

১৯৯৮ সালে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মারা যান রুবেল।

প্রায় একই সময়ে সীমা চৌধুরী নামের এক তরুণী চট্টগ্রামের রাউজানে পুলিশ হেফাজতে ধর্ষণের শিকার হন ও মারা যান। অরুণ চৌধুরী নামের এক যুবক রাজধানীর মালিবাগ থানায় পুলিশ হেফাজতে মারা যান। এরপর তৎকালীন সরকার রুবেল হত্যা তদন্তের জন্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে।

এ সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হাইকোর্টে রিট করে। ওই রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল এ ব্যাপারে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান সংশোধন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ধারাগুলো সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়। এর বিরুদ্ধে আপিলে যান রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল আবেদনে বলা হয়, এ দুটি ধারা সংশ্লিষ্ট যে আইনে রয়েছে, তা যথেষ্ট ও সঠিক। এজন্য আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই।

২০০৪ সালে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেন। তবে হাইকোর্টের ওই নির্দেশনাগুলো স্থগিত করেননি। দীর্ঘদিন পরে ২০১৬ সালের ১৭ মে আপিল শুনানি শেষে ২৪ মে রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। এরপর একই বছরের ১০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৩৯৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। রায়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার (৫৪ ধারা) নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য ১০ দফা নীতিমালা করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। পরে রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস

বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর