Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়ক দুর্ঘটনা: ঈদের আগে-পরের ১৫ দিনে নিহত ৩২৪

সারাবাংলা ডেস্ক
১৪ জুলাই ২০২৩ ১৭:০৪

ফাইল ছবি

ঢাকা: ঈদুল আজহার আগে ও পরের ১৫ দিনে দেশে ৩০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৪ জন নিহত হয়েছেন। সেই হিসেবে এই কয়দিনে গড়ে ২১ জন নিহত হয়েছেন। গত ২৩ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনায় অন্তত ৬৩১ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে ৬১ জন নারী ও ৭২ জন শিশু রয়েছেন। এর মধ্যে ১১৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ৬৯ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৭ জন, যা মোট নিহতের ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এই সময়ে ১৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৬ জন। নিখোঁজ রয়েছেন ১৩ জন। আর ২৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১০৬ জন, যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭১ শতাংশ। বাস যাত্রী ১০ জন, যা মোট নিহতের ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ২৪ জন, যা মোট নিহতের ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ। প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২৫ জন, যা মোট নিহতের ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ। থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি) ৭০ জন, যা মোট নিহতের ২১ দশমকি ৬০ শতাংশ। স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র) ১১ জন, যা মোট নিহতের ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এছাড়া বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ৯ জন, যা মোট নিহতের ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে জাতীয় মহাসড়কে ১৩১টি, যা মোট দুর্ঘটনার ৪৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। আঞ্চলিক সড়কে ১১৫টি, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। গ্রামীণ সড়কে ৩৭টি, যা ১২ দশমিক ২১ শতাংশ। এছাড়া ২০টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে, যা মোট দুর্ঘটনার ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ।

৩০৩টি দুর্ঘটনার মধ্যে ৫৭টি মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যা মোট দুর্ঘটনার ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৪৯টি, যা মোট দুর্ঘটনার ৪৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটে ৭২টি, যা মোট দুর্ঘটনার ২৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া যানবাহনের পেছনে আঘাত করার কারণে ২৫টি, যা মোট দুর্ঘটনার ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৫৯১টি। এর মধ্যে বাস ৯৭টি , ট্রাক ৫৮টি, কাভার্ডভ্যান ১৫টি, পিকআপ ভ্যান ৩৮টি, র‌্যাবের পিকআপ ১টি, ট্রাক্টর ৭টি, ট্রলি ৮টি, লরি ৩টি, তেলবাহী ভাউচার ১টি, লং ভেহিক্যাল ১টি, মাইক্রোবাস ১৮টি, প্রাইভেটকার ১৬টি, অ্যাম্বুলেন্স ৬টি, পাজেরো ৩টি, জীপ ২টি, মোটরসাইকেল ১২২টি, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-ম্যাক্সি) ১১৮টি, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা-স্টীয়ারিং গাড়ি) ৫২টি, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা ১৬টি এবং অজ্ঞাত গাড়ি ৯টি।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগে ৩০ দশমিক ৬৯ শতংশ দুর্ঘটনা ঘটে, এতে প্রাণহানি ঘটে ৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১২ দশমিক ২১ শতাংশ, প্রাণহানি ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাণহানি ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, প্রাণহানি ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, প্রাণহানি ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ, প্রাণহানি ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে, এতে ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ প্রাণহানি হয়।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে, বিভাগে ৯৩টি দুর্ঘটনায় ৯৯ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৫ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে টাঙ্গাইল জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, বান্দরবান, পিরোজপুর ও জামালপুর জেলায়। এই ৫টি জেলায় স্বল্প মাত্রার কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। এদিকে রাজধানী ঢাকায় ১১টি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছে।

ঈদযাত্রা ও দুর্ঘটনা পর্যালোচনা করে রোড সেফটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এবারের ঈদুল আজহা উদযাপনকালে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ২১ দশমিক ৬ জন নিহত হয়েছেন। গত ঈদুল আজহায় এই সংখ্যা ছিল ২৫ দশমিক ৯১ জন। এই হিসাবে গত বছরের তুলনায় এ বছর দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমেছে। পূর্বের বছরের তুলনায় এবারের ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বেশি ছিল বলে প্রাণহানি কমেছে।

সারাবাংলা/এনএস

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সড়ক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর