ঢাকা: টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছেই। শনিবার (১৫ জুলাই) তিস্তার পানি আবারও বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনির হাট এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৫ জুলাই) ভোর ৬টায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অন্যদিকে গঙ্গাচড়ায় সকাল ৯টায় বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়ায় বিপদসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে জেলার ৫ উপজেলার নদীর তীরবর্তী ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যেতে পারে এবং বিপদসীমার ওপরে অবস্থান করতে পারে। পরবর্তীতে আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে আসতে পারে।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চরইছলী, শংকরদাহ, নোহালী ইউনিয়ের চর বাগডোহরা, মিনারবাজার, দিলিপবাজার, নোহালীর চর, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনকর চর ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩০০ বাড়িঘরসহ ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া আলমবিদিতর ও গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বাড়িঘরে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করায় শত শত বাড়ির অনেক মালামাল পানির তোড়ে ভেসে গেছে। বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় সহস্রাধিক পরিবার নিকটস্থ উঁচু স্থান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর চুসমারার চরসহ চারটি চরাঞ্চলে বানের পানি প্রবেশ করায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ।