বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের তৈরি স্যাটেলাইট যাবে চাঁদে
১৬ জুলাই ২০২৩ ০৮:৫০
কুবি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (NASA) উদ্যোগে চাঁদে মানুষের বসবাসের সম্ভাব্যতা খুঁজতে মনুষ্যবিহীন স্যাটেলাইট পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশসহ মোট ২২টি দেশ। এতে অংশ নেওয়া ‘টিম বাংলাদেশ’ দলে কাজ করছে বাংলাদেশের তরুণ গবেষকরা। টিমের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও অ্যাস্ট্রোরোবটিক্স স্পেশালিস্ট হিসেবে রয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জিত মণ্ডল।
স্যাটেলাইটের যাবতীয় কাঁচামাল ও রকেটের লঞ্চিং খরচ নাসার কলোরেডো স্পেস গ্রান্ট কন্সোর্শিয়াম বহন করবে। স্যাটেলাইটের মিশন প্ল্যানিং থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট রি-ডিজাইনিং, এসেম্বলি, টেস্টিং, রকেট লঞ্চিং এবং চাঁদে যাওয়ার পর মিশন কন্ট্রোল, ডাটাসংগ্রহ, ডাটা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণে সার্বক্ষণিক সহায়তা বজায় রাখবে নাসা।
বিভিন্ন অ্যাডভান্স ডাটা সায়েন্স ও মেশিন লার্নিং এলগরিদম ব্যবহার করে চাঁদে স্থায়ী মানবসভ্যতা বিকাশের উপায় ও করণীয় খুঁজে বের করা হবে। এছাড়া চাঁদে কৃষি কাজ, ঘরবাড়ি, রাস্তা ঘাট ইত্যাদি অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে স্যাটেলাইট ডাটা বিশ্লেষণ।
এর আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি যন্ত্রাংশ পাঠিয়েছে নাসা। মাত্র ৩৬ সেন্টিমিটার ও ৫ গ্রাম ওজনের এসব স্যাটেলাইট অভিযান উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
টিমের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও অ্যাস্ট্রোরোবটিক্স স্পেশালিস্ট সঞ্জিত মণ্ডল বলেন, ‘চাঁদে স্যাটেলাইট পাঠানোর মতো একটি টিমে অংশগ্রহণ করতে পারছি, এটি গর্বের। দেশের জন্য কাজ করছি, এর মাধ্যমে সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারব।;
নাসায় স্যাটেলাইট পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা স্যাটেলাইট তৈরি করছি। স্যাটেলাইটের যাবতীয় সরঞ্জাম নাসা আমাদের প্রোভাইড করেছে। এটুআই আমাদের ল্যাব সাপোর্ট দিচ্ছে, নাসা আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের স্যাটেলাইট তৈরি করার পর ওই স্যাটেলাইটের প্রোগ্রামিং আমাদেরই করতে হবে এবং সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে বাংলার মাটি থেকে নির্মিত প্রথম স্যাটেলাইট চাঁদের মাটিতে অবতরণ করবে। আমাদের স্যাটেলাইটগুলো চাঁদের মাটিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিবে নাসা। নাসার শর্ত হচ্ছে, স্যাটেলাইটটির ওজন হবে সর্বোচ্চ ২০ গ্রাম, কিন্তু আমরা তা ৫ গ্রামে করার চেষ্টা করছি। আমরা কাজ শেষে নাসায় পাঠাবো স্যাটেলাইটগুলো। স্যাটেলাইট চাঁদের যাওয়ার পর আমরা চাঁদের সব ধরনের তথ্য বাংলাদেশে বসে দেখতে পারব। আমরা ডাটাগুলো নিয়ে গবেষণা করব- আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় কাজে লাগাতে পারব।’
প্রসঙ্গত, এর আগে সঞ্জিত মণ্ডলের নেতৃত্বে কুবি শিক্ষার্থীরা রোবট ‘সিনা’, ‘ব্লুবেরি’ ও ‘নিকো’ তৈরি করে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এবার তিনি অংশ নিচ্ছেন মহাকাশ গবেষণায়।
সারাবাংলা/এমও