‘আমি ভালো আছি’- কক্ষপথে গিয়ে থেলিসকে জানাল বঙ্গবন্ধু-১
১২ মে ২০১৮ ০৫:০৯
।সন্দীপন বসু।
‘আমি ভালো আছি’- কক্ষপথে গিয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেলিস অ্যালেনিয়া স্পেসকে জানালো বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টা ১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর কেনেডি স্পেস সেন্টারের কেপ কেনভেরাল লঞ্চ প্যাড-৩৯ থেকে বাংলাদেশের এই স্বপ্ন মহাকাশপানে যাত্রা শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ অনুসন্ধান ও মহাকাশ যান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে এটি উৎক্ষেপণের পর ৩ মিনিটের মধ্যে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পৌঁছে। আর এর ৩৩ মিনিট পর উৎক্ষেপণযান বা রকেট ফ্যালকন-৯ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটিকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত ভূ-স্থির পরিবহন কক্ষপথ (অরবিট প্লটে) পৌঁছে দিয়ে আসে। এরপর বঙ্গবন্ধু-১ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে জানায়, ঠিক আছে সে। সবকিছুই চলছে নির্ধারিতভাবেই। এবার কিছু নির্ধারিত কর্মকাণ্ড সেরে কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ দ্রাঘিমাংশে অবস্থান নেবে বঙ্গবন্ধু-১।
এদিকে স্পেস এক্স নিজেদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু-১ এর উৎক্ষেপণ সম্পূর্ণ নির্ভুল ছিল।
এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ২ টা ১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড-৩৯ থেকে মহাকাশপানে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের এই স্বপ্ন। এর আগে রাতে কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে প্রস্তুতি শুরু হওয়ার তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৩টা ৪৭ মিনিটে বঙ্গবন্ধু-১ এর যাত্রা বাতিলের পর স্পেসএক্স জানিয়েছিল শেষ মুহূর্তে গ্রাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা দেখা দেয়ায় উৎক্ষেপণ বাতিল করা হয়। ওড়ানের জন্য রাখা রিজার্ভ ডে আজ শুক্রবার একই সময়ে ‘বঙ্গবন্ধু-১’ আবারও উৎক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিটে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটে করে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মহাকাশে পাড়ি জমানোর কথা ছিল। পরে সেই সময় বাড়িয়ে ৩টা ৪৭ মিনিটে নির্ধারণ করা হয়। পরে সময় আরও ১৫ মিনিট বাড়িয়ে ৪টা ২ মিনিটে উৎক্ষেপণের কথা বলা হয়। সবশেষে ৪টা ৭ মিনিটে উৎক্ষেপণের স্থগিতের কথা জানায় স্পেসএক্স।
স্পেসএক্স ওয়েবসাইটে আরো জানিয়েছে এর উৎক্ষেপণযান বা রকেট ফ্যালকন-৯ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত অরবিট প্লটে স্থাপন করবে।
বিশেষ এই ক্ষণের স্বাক্ষী হতে গতকালের মতো ইউটিউবে, টেলিভিশনের পর্দায় চোখ ছিল বিশ্বজুড়ে বাঙালির। এ যেন স্যাটেলাইটের মহাকাশযাত্রা নয়, বাঙালির মহাকাশযাত্রা। অনেকে আবার নিজের এলাকায় টাঙানো বড় পর্দায় প্রত্যক্ষ্য করেন বাংলাদেশের প্রথম বাণিজ্যিক উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু-১’কৃত্তিম উপগ্রহের মহাকাশের পথে রওনা হওয়ার মূহুর্তটি।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৯০২ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট এক হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা বিডার্স ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় সংকুলান হয়েছে।
সারাবাংলা/ এসবি