Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সহিংসতার উসকানি দিলে সমুচিত জবাব— বিএনপিকে আওয়ামী লীগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুলাই ২০২৩ ২২:০৩

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে আন্দোলনের নামে উসকানি দিয়ে সহিংসতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে রাজপথে জবাব দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

মঙ্গলবার ( ১৮ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশ থেকে বিএনপিকে এমন হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা। রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের (আইইবি) সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে নেতারা বক্তব্য দেন। ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

এদিন দুপুর ১টার পর থেকে নেতাকর্মীরা রঙিন টি-শার্ট ও ক্যাপসহ বাদ্য-বাজনায় পিকআপ, মিনি ট্রাক, ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। উৎসবমুখর পরিবেশে স্লোগান দিয়ে তারা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। আইইবির গেটে সামনে দুটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চে শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে নেতারা বক্তব্য দেন।

ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সামনে সমাবেশ শেষে উন্নয়ন শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড ও সিটি কলেজের সড়ক হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বুধবারও বিকেল তিনটায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের মাটিতে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না দাবি করে বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার আগামী দিনে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। এটাই সংবিধানের কথা। তাই সন্ত্রাস না, নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। অথবা আপনাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’

নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পার্টির কর্মীদের স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট কর্মী বানাতে চাই। মারামারি-পাল্টাপাল্টির দরকার নাই। আমাদের উপর আক্রমণ হলে ওই পরিস্থিতিই বলে দেবে, আমরা কী করব। তখন কার কী কর্তব্য। নিজেরা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন। আমরা কারো সঙ্গে পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চাই না। কিন্তু ঝগড়া করতে আসলে, কেউ অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইলে, আমরা দাঁতভাঙ্গা জবাব দেব।’

বিএনপিকে সংবিধান মতো নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দফা আমাদেরও একটা আছে। আমাদের দফা বাংলাদেশের সংবিধান। সংবিধানে যা লেখা আছে, সেটাই আমরা নির্বাচনে প্রয়োগ করব। নির্বাচন কমিশন সেভাবেই বাংলাদেশে নির্বাচন করবে। এর বাইরে এক চুলও আমরা নড়ব না। যত কিছুই করেন। মারামারি-পাল্টাপাল্টির হুমকি। আওয়ামী লীগ এদেশের মাটি মানুষের পার্টি, বঙ্গবন্ধুর পার্টি। শেখ হাসিনার পার্টি, এই পার্টি কারো কাছে মাথা নত করে না।’

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া তার বক্তব্যে বলেন, ‘এই সমাবেশ প্রমাণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের একমাত্র সংগঠন, যা যেকোনো অপশক্তিকে মোকাবিলা করতে সক্ষম। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, এই সন্ত্রাসী দল আজকেও সকালে মিরপুরে ছাত্রলীগের কর্মী ভাইদের উপর আক্রমণ করেছে। হুন্ডা পুড়িয়ে দিয়েছে। বাস-গাড়ি ভাংচুর করেছে। এই হলো বিএনপির চরিত্র। ইতোমধ্যেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে। আমরা রাজপথে রয়েছি, রাজপথে থাকব এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের জয়গান গাইব। আজকে থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকব এবং মাঠে থেকেই তাদের প্রতিহত করা হবে।’

কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের একজন নন্দিত নেত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রী। সকল ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রযাত্রা-অর্জন, সে অর্জন-অগ্রযাত্রাকে একটি গোষ্ঠী থামিয়ে দিতে চায়। ষড়যন্ত্র করছে থামিয়ে দেওয়ার জন্য। আগামী নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা করছে। তাদের পদযাত্রার নামে মিরপুরে ছাত্রদের উপর আক্রমণ করেছে, হুন্ডা পুড়িয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের উপর আক্রমণ করেছে এটা কিসের আন্দোলন? তারা আবার সন্ত্রাসের পথে হাঁটতে চায়। তারা আবার দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা বাংলাদেশকে আবার সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য করতে চায়।’

মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত আবার রাজপথে সহিংসতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা রাজপথে সহিংসতা সৃষ্টি করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দাঁতভাঙ্গা জবাব দেব।’

আবু আহমেদ মান্নাফি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় সুনিশ্চিত দেখে বিএনপি-জামায়াত নানাভাবে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে উসকানি দিচ্ছে। তাদের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা কারো সঙ্গে কোনো নৈরাজ্য চাই না। কিন্তু আমাদের পায়ে পা দিয়ে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।’

সারাবাংলা/এনআর/আইই

ওবায়দুল কাদের টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর