Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদেশ নিয়ে যাওয়ার শর্তে ভাই পরিচয়ে কিডনি দান!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৯ জুলাই ২০২৩ ২৩:০২

ঢাকা: দেশে বিদ্যমান মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন অনুযায়ী নিজ পরিবারের সদস্য ছাড়া কিডনি দেওয়ার নিয়ম নাই। তবে সোমবার (১৭ জুলাই) বিএসএমএমইউ’র সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রথমবার কিডনি প্রতিস্থাপনেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিদেশ নিয়ে যাওয়ার শর্তে পরিবারের সদস্য না হয়েও কিডনি দান করেছেন এক যুবক।

কিডনিদাতা জানিয়েছেন, গ্রিসে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার কিডনি নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগী ও কিডনিদাতার মধ্যে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে উঠেছে। এসব অনিয়ম তদন্তে বুধবার (১৯ জুলাই) চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সোমবার বিএসএমএমইউয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রথম কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন হয়েছে। ৪২ বছর বয়সী বড় ভাই সুজন রায়কে কিডনি দিয়েছেন তার ৩১ বছর বয়সী ছোট ভাই সুসেন রায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের চিকিৎসক দল এ ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমে অংশ নেন বলেও জানানো হয়।

বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কিডনিদাতা বিএসএমএমইউয়ের চতুর্থ তলায় আইসিইউতে আছেন। কিডনিগ্রহীতা সাততলার পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের (অস্ত্রোপচার–পরবর্তী ওয়ার্ড) আইসিইউতে রয়েছেন। কিডনি গ্রহীতা ও কিডনি দাতা উভয়েই সুস্থ আছেন।

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানায়, সুজন রায় (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে কিডনি দিয়েছেন তার ছোট ভাই সুসেন রায় (৩১)। আসলে কিডনিদাতার নাম সুমিত হাওলাদার।

বিজ্ঞাপন

সুমিত হাওলাদারের স্ত্রী জানান, সুসেন রায় নামে যিনি কিডনি দিয়েছেন তিনি আমার স্বামী সুমিত হাওলাদার। তিনি পরিবারকে না জানিয়েই কিডনি দিতে এসেছেন। আমাদের জানিয়েছেন তিনি বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে ঢাকায় যাচ্ছেন। পরে গণমাধ্যমে খবর দেখে আমরা হাসপাতালে আসি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছিলেন গ্রিস প্রবাসী সুজন রায়। গ্রিসে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ বেশি হওয়ার তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তিনি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য চেষ্টা করে যান। পরবর্তী সময়ে বিএসএমএমইউতে দালালের সঙ্গে আর্থিক চুক্তিতে কিডনি পান তিনি। পরে কিডনি গ্রহীতা পরিবারের পক্ষ থেকে স্বীকার করে নেওয়া হয় সত্যি।

তারা জানান, হাসপাতালে যিনি কিডনি দিয়েছেন তার নাম সুসেন রায় নয়। দাতা ও গ্রহীতা সম্পর্কে ভাই নন। কিডনিদাতাকে গ্রিসে পাঠানো হবে- এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিডনি নেওয়া হয়েছে। দেশের বর্তমান আইনে আপন ভাইকে কিডনি দেওয়া যায়। এমনকি নিকটাত্মীয় ছাড়া কারও কিডনি নেওয়া যায় না।

বুধবার এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে শোনার পর খুবই অবাক হয়েছি। এ ঘটনায় এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুততার সঙ্গে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন এলে বলা যাবে আসলে ঠিক কী ঘটেছিল।

বিএসএমএমইউয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়াটিক অ্যান্ড লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক মো. মহছেন চৌধুরীকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এছাড়া কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন- পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক আতিকুল হক, গাইনি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম ও বিএসএমএমইউয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. হেলাল উদ্দিন।

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

কিডনি দান বিদেশ ভাই পরিচয় শর্ত

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর