‘বিএনপি সরকার গঠন করলে পুলিশ ভালোভাবে চাকরি করতে পারবে’
২১ জুলাই ২০২৩ ২১:২৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পুলিশ ভালোভাবে চাকরি করতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আপনাদের (পুলিশ) তো সময় আছে। আপনাদেরকে তো চাকরি করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে আপনারা ভালোভাবে চাকরি করতে পারবেন।’
‘আমরা আশা করব, আমাদের পক্ষ থেকে যে মামলা নিয়ে থানায় যাওয়া হয়েছে সে মামলা আপনারা গ্রহণ করবেন।’
শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেলে নগরীর কাজির দেউড়ির নসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের মাঠে বিএনপি অফিসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার প্রতিবাদে মহানগর বিএনপির প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মামলা দিয়ে বিএনপিকে আন্দোলন থেকে দূরে সরে রাখা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত ১৯ জুলাইয়ের (বুধবার) পদযাত্রা কর্মসূচিতে চট্টগ্রামবাসী দেখিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম বিএনপির ঘাঁটি। সেদিন লাখ লাখ জনতার জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। এটা আওয়ামী লীগের সহ্য হয়নি। তাই তারা চট্টগ্রামকে অশান্ত করার জন্য বিএনপি অফিসে হামলা চালিয়েছে।’
‘কিন্তু এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করার জন্য বিএনপি প্রস্তুত রয়েছে। বিএনপিকে ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। এক লাখ মামলা, ছয়শত নেতাকর্মীকে গুম ও হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে।’
‘কিন্তু বিএনপিকে কি দমাতে পেরেছেন? বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন রোদে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়ে গেছে। মামলা দিয়ে ভয় দেখিয়ে নেতাকর্মীদের আন্দোলন থেকে দূরে সরে রাখা যাবে না।’
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের কাছে পুলিশ অসহায় মন্তব্য করে শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, ‘গত বুধবার আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যখন লালখান বাজার থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপির অফিসের দিকে হামলা করতে আসছিলো, তখন পুলিশও তাদেরকে প্রতিরোধ করার জন্য এসেছিলো। কিন্তু এত বড় কোতোয়ালি থানার পুলিশ থাকতে এই সামান্য সন্ত্রাসীদের রুখতে পারলেন না? ভিডিও ফুটেজে দেখেছি পুলিশকে তারা ধাক্কা দিয়ে ফেলে বিএনপি অফিসে ঢুকে সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে।’
‘আগুন লাগিয়ে ল্যাপটপসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সেদিন এই সন্ত্রাসীদের সামনে পুলিশের অসহায়ত্ব আমরা দেখেছি। অপরাধী যেই হোক না কেন তাদেরকে গ্রেফতার করা আপনাদের দায়িত্ব ছিল। আমরা বলতে চাই, আপনারা নির্ভয়ে কাজ করেন। উপরের নির্দেশ শুনবেন না।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার গভীর চক্রান্তে লিপ্ত। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মামলা দায়েরের ঘটনা নিত্য ঘটছে। কিন্তু হামলা মামলার মাধ্যমে বিএনপিকে ধমিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না। বিএনপি কোনো সময় আপস করেনি। এসব বানোয়াট মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগ ডুবন্ত সূর্য মন্তব্য করে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘বুধবারের পদযাত্রা কর্মসূচি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ নিয়ে আমরা দারুল ফজল মার্কেট ও নিউমার্কেট সংলগ্ন আওয়ামী লীগের অফিসের পাশ দিয়ে গেছি কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা ওইদিকে মুখ ফিরেও তাকায়নি। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমরা যখন অফিসে ছিলাম না তখন এসে চোরের মত হামলা করে চলে গেছে।’
‘এই ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকে করা মামলা না নিয়ে উল্টো আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ বাদী হয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বিএনপির নেতা কর্মীরা এখন মামলাকে ভয় করে না। আওয়ামী লীগ দেশকে এখন মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে। সূর্য ডোবার সময় লাল হয়ে যায়, আওয়ামী লীগ এখন সেই ডুবন্ত সূর্য।’
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপি অফিসে সেদিন পৈশাচিক তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা মানুষের অধিকার হরণ করেছে। তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করি না। আওয়ামী লীগ এখন জনগণ ও বিদেশিদের চাপে দিশেহারা। তারা আবোল তাবোল বকছে। এসব করে শেষ রক্ষা হবে না। চলে যেতেই হবে।’
নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, মো. মিয়া ভোলা, আবদুস সাত্তার, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, নুর মোহাম্মদ, সদস্য জয়নাল আবেদীন জিয়া, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আবুল হাশেম, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল্লাহ বাহার, মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, নগর শ্রমিকদলের সভাপতি তাহের আহম্মেদ, তাঁতীদলের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া।
সারাবাংলা/আইসি/একে