Tuesday 13 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুলাই ২০২৩ ১৯:২১ | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৩ ২১:০৩

ঢাকা: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ চিকিৎসা সেবা দেওয়া বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কে-৮০ ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের কাজ নয়, আমাদের কাজ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ জনগণকে অবহিত করা।

তিনি বলেন, কেউ যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় তারা যেন দ্রুত হাসপাতালে চলে আসে। পাশাপাশি যদি জ্বর হয় তাড়াতাড়ি যেন পরীক্ষাটা করে ফেলে। পরীক্ষাটা একটু কম হচ্ছিল। সে কারণে পরীক্ষাটা বাড়ানো হয়েছে। যে পরীক্ষা ১০০ টাকা ছিল সেটা আমরা ৫০ টাকা করে দিয়েছি। যাতে লোকজনের মধ্যে আগ্রহ বাড়ে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দেখছি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী বেশী আছে অন্যান্য জেলাতেও বাড়ছে। আমাদেরকে মশা কমাতে হবে। মশা কমলে মানুষ কম আক্রান্ত হবে। ডেঙ্গু যেহেতু প্রতি বছর কমবেশী হচ্ছে, যদি এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তাহলে কম আক্রান্ত হবে। আমাদের যে সিটি করপোরেশন আছে তাদের সারা বছরই মশা নিধনের কাজটি করতে হবে। শুধু বর্ষা মৌসুমে কাজ করলে হবে না। সারা বছরই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। অন্যান্য দেশে যেখানে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রন করছে, সেখান থেকে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

তিনি বলেন, অনেক রোগীরা বলেছে, তাদের এলাকায় যেটা স্প্রে করা হয়। সেটাতে মশা মরে না, লার্ভাটাও ধ্বংস হয় না। তাহলে যে ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে, সে ওষুধেরও পরিবর্তন হওয়া দরকার। পাশাপাশি জনগনেরও সচেতন হওয়া উচিৎ। নিজেদের আঙিনায়, ঘরে মশা যাতে না থাকে স্প্রে করা এটাতো করপোরেশন করে দিতে পারবে না।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতলে পর্যাপ্ত স্যালাইন আছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকদিন ১২০০ স্যালাইন ব্যবহার হচ্ছে। রোগীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, তারা যথেষ্ট চিকিৎসা পাচ্ছে। বেসরকারী হাসপাতালেও ডেঙ্গু চিকিৎসা আছে। ওষুধ আছে চিকিৎসারও কোন ঘাটতি নেই। গ্রামেতো বিশেষায়িত চিকিৎসা নেই। সেজন্য অনেকেই ঢাকায় চলে আসে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। আমাদের দেশে এখন ১৮টি সরকারী মেডিকেল কলেজে একটি ডেন্টাল কলেজে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। ৩৭টি মেডিকেল কলেজ আমাদের দেশে রয়েছে। যেখানে সিটের সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪ হাজার ৩৫০টি। ভর্তির পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে প্রায় ৪৯ হাজার ছাত্র-ছাত্রী। তাদেরকে বিভিন্ন বেসরকারী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছি। সরকারী কলেজে ১১ হাজার ছাত্রছাত্রী ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

তিনি বলেন, এবার আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছি। যা নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন করতে পারেনি। দেশবাসী প্রশংসা করেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার সময় কিন্তু অন্যান্য জায়গায় সেভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমরা এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছি, সেজন্য তাদের এক বছর নষ্ট হয়নি এবং অটো পাশও হয়নি। মেডিকেল সাইন্সে অটোপাশের কোনো সুযোগ নাই।

নতুন ভর্তি হওয়া এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখানে যারা নতুন এমবিবিএসে ভর্তি হয়েছে আমি তাদেরকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। আমি মনে করি তোমরা গর্বিত শিক্ষার্থী এবং খুবই ভাগ্যবান। তোমাদের জার্নি কেবল শুরু হইলো, এখনও অনেক বাকি। শুরুতেই ঠিক করতে হবে আমি একজন ভালো ডাক্তার হবো। তার উপড়েই নির্ভর করবে সে কতখানি সিনসিয়ার হবে। কতখানি পরিশ্রম করবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এখান থেকে যারা চিকিৎসক হয়ে বেরিয়ে যাবে তাদের ঢাকা মেডিকেলের সুনাম ধরে রাখতে হবে। এই সুনাম ধরে রাখার একমাত্র পন্থা হলো এখান থেকে ভালোভাবে শিক্ষা লাভ করা এবং এখান থেকে পাস করে বেরিয়ে যাওয়া।

নবীন বরণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. দেবেস চন্দ্র তালুকদার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর মহাপরিচালক ডা. মিঞা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক নাজমুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এসএসআর/এনইউ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর