ঢাকা: গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের নামে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় স্থিতাবস্থা দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এ আদেশের ফলে মামলাটি যে আদালতে যে পর্যায়ে আছে, আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত সে পর্যায়েই থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এ মামলায় হাইকোর্টের জারি করা রুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ।
আদেশের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল করা নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ জুলাই রুল জারি করেছিছেন। সে রুলটি স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিল।
আজ আদালত স্থগিতাদেশ না দিয়ে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত মালাটিতে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। ওইদিন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সে পর্যন্ত মামলাটি যে আদালতে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থাতেই থাকবে।
এর আগে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত ৬ জুন অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ আদেশ দেন।
বিচার শুরু হওয়া অন্য তিন আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
পরে ওই মামলার আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
এরপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন। তারপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আপিল করা হলে জারি করা রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট সেই রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে ড. ইউনূস আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এবং যা গত ৮ মে ড. ইউনূসের লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপর গত ৬ জুন শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ আদেশ দেন।