‘দুয়েকটা দেশ আ.লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়’
২৫ জুলাই ২০২৩ ২৩:৩৬
রোম: দুয়েকটা দেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অপপ্রচারে অনেক সময় বিদেশিরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। আর দুয়েকটা দেশ তো আছেই যারা প্রতিটি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে কীভাবে সরাবে সেদিকে ব্যস্ত থাকে। তারা খুনিদের আশ্রয় দেয়; জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নিয়েও ওঠাবসা করে। এমনকি অগ্নি সন্ত্রাসের আসামিদের মানবাধিকার নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু যে ভিকটিম বা স্বজন হারা বা যে পুড়ে গেছে- তাদের নিয়ে তাদের চিন্তা নাই।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল রোমের পারকো ডেই প্রিনসিপি গ্র্যান্ড হোটেলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিদেশিরা যাতে বিভ্রান্ত না হয় সেজন্য অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলব, এই যে অপপ্রচারগুলো হয় সঙ্গে সঙ্গে মূল তথ্যগুলো রাষ্ট্রদূতদের জানানো উচিত। এটা কিন্তু আপনারা জানাবেন। তাহলে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেখানে আছে সেখানে আরও সক্রিয় হওয়া দরকার।’ অপপ্রচারের কারণে অনেক সময় বিদেশিরা বিভ্রান্ত হয় বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু লোক যারা বিভিন্ন কারণে- দুর্নীতির কারণে বা অপরাধ করে চাকরি হারিয়েছে, দেশ-বিদেশে তারা এখন বসে আছে। আমি জানি না এত অর্থ তারা কোথা থেকে পায়। তারা বসে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে থাকে।’ তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিলে দেখতে পাবেন অতি চেনা পরিচিত কিছু মুখ। প্রতিটি জায়গায় তারা মিথ্যা অপপ্রচার দেয়।’
র্যাবের বিরুদ্ধে স্যাংশন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্য হলো যাদের দিয়ে সন্ত্রাস ঠেকাই, জঙ্গিবাদ ঠেকাই তাদের ওপরে যদি স্যাংশন দেয় তারা তো মনোবল হারিয়ে ফেলে। মানুষের অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।’ এ সময় সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
মানবাধিকার বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘মানবাধিকার যদি সংরক্ষণ করে থাকে সেটা আওয়ামী লীগই করে। আর যারা এখন মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার তারা তো মানুষ খুন করে। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে, গ্রেনেড হামলা করেছে, ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তার পুরো পরিবারকে হত্যা করেছে।’
একটি দেশের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন হয়তো মানবাধিকার নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে আসে। যারা আমার বাবা-মা, ভাই, আত্মীয়, পরিবার-পরিজনকে গুলি করে হত্যা করেছে, সেই খুনিরা তো সেই দেশে বহাল তবিয়্যতে আছে। আমরা বার বার অনুরোধ করার পর তাদের ফেরত দেয় না। অর্থাৎ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের প্রটেকশন (সুরক্ষা) দিচ্ছে। আর যারা মানবাধিকার সংরক্ষণ করে তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। এরকম একটা খেলা আমি দেখতে পাচ্ছি।’ এ সময় তিনি মানবাধিকার প্রশ্নে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। এই দূত সম্মেলনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত ১৫ জন রাষ্ট্রদূত অংশ নেন।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম