সময় এসেছে রাজপথে ফয়সালার: রিজভী
২৬ জুলাই ২০২৩ ১৬:১৩
ঢাকা: আগামীকাল বিএনপির মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে মন্তব্য করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘মহাসমাবেশ উপলক্ষে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নেতাকর্মীরা সরকারের সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সফল করবে। কারণ, সময় এসেছে রাজপথে ফয়সালা করার।’
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘গতকাল আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই নিশিরাতের গণশত্রু সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সারাদেশ থেকে দলে দলে ২৭ জুলাই ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গণতন্ত্রকামী ভোট বঞ্চিত গোটা দেশের মানুষকে যে আহ্বান জানিয়েছেন তাতে সাড়া দেওয়ার জন্য আমি দলের পক্ষ থেকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
‘কারণ, সময় এসেছে বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকা কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নব্য বাকশালী মাস্টারপ্ল্যান চূর্ণবিচূর্ণ করে অধিকার প্রতিষ্ঠার। টানা ১৫ বছর ভোট ডাকাত আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে পিষ্ট সব মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার আদায় জনগণের এখন মূল দাবি। এজন্য সকলকে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’
রিজভী বলেন, ‘চলমান আন্দোলনকে চূড়ান্ত সফলতায় নিতে বিএনপি এবং গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল, আগামী ২৭ জুলাই রাজধানী ঢাকায় মহাসমাবেশ আহ্বান করেছে। এই সমাবেশ, স্রেফ কোনো একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সমাবেশ নয়। এই সমাবেশ, ছাত্র-তরুণ-যুবক-নারী-শিশু এবং সকল শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার সমাবেশ।’
তিনি বলেন, ‘এ সমাবেশ সাংবাদিকরা যাতে স্বাধীনভাবে লিখতে পারেন সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সমাবেশ। এই সমাবেশ মানবাধিকার কর্মীরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, তেমন পরিবেশ তৈরির জন্য সমাবেশ। এই সমাবেশ দেশের সিভিল সোসাইটি যাতে নিরাপদ পরিবেশে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতে পারেন তেমন রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার সমাবেশ। এই সমাবেশ ১২ কোটি মানুষের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারের সমাবেশ। এ সমাবেশ রাজনীতিবিদরা যাতে মানুষের পক্ষে নির্ভয়ে কথা বলতে পারেন, সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ।’
রিজভী বলেন, ‘জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন- আপনারা অযথা আন্দোলনকারী জনগণকে হয়রানি করবেন না। আন্দোলনকারী জনগণ আপনাদের শত্রু নন। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। কোনো দলের নন।’
তারেক রহমানের পক্ষ থেকে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করে রিজভী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার গত ১৫ বছরে নিজের দলীয় স্বার্থে প্রশাসনের নিরপেক্ষ চরিত্র নষ্ট করে দিয়েছে। জনগণের রায়ে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিহিংসামূলক আচরণের শিকার হবেন না। বরং, ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রশাসনে আপনাদের কেউ আইন অনুযায়ী কাজ করার দায়ে বিপদে পড়লে কিংবা চাকরি হারালে ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক সরকার অবশ্যই আপনাদের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস