Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পুলিশ বলে গেছে ৮টার পর হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ জুলাই ২০২৩ ১৮:১৪

ঢাকা: রাজধানীর পল্টন, নয়াপল্টন ও মতিঝিলসহ আশাপাশ এলাকায় বুধবার (২৬ জুলাই) রাত ৮টার পর আবাসিক ও খাবার হোটেল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিএনপিসহ সরকার বিরোধী সমমনা দলগুলো নয়া পল্টন ও এর আশপাশে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। একইদিনে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

বিজ্ঞাপন

বড় তিনটি দল ও ছোট বেশ কয়েকটি দলের সমাবেশে হাজার হাজার নেতাকর্মী সমবেত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি বাইরের জেলা ও শহরগুলো থেকেও দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পুলিশের পক্ষ থেকে রাজধানীর এসব এলাকায় আবাসিক ও খাবার হোটেল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলো।

আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়া পল্টন এলাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বায়তুল মোকাররমের উত্তরগেটে সমাবেশের ডাক দিয়েছে। তাদের সঙ্গে একাত্বতা ঘোষণা করে গণ অধিকার পরিষদ, গণতন্ত্র মঞ্চসহ ছোট ছোট বেশ কয়েকটি দল পল্টন ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। একইদিনে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি জনসমাগম করার ঘোষণা দিয়েছে দলটির অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সূত্র জানায়, রাজধানীর প্রবেশ গেট আমিন বাজার, আব্দুল্লাহপুর, বছিলা, বাবু বাজার, পোস্তগোলা ব্রিজ, ডেমরা, ৩০০ ফিট সড়ক ও যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায় যানবাহনে তল্লাশি হতে পারে এমন আশঙ্কায় নেতাকর্মীদের বেশিরভাগ অংশই আগেভাগে রাজধানীতে এসে পড়েছে।

এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট এলাকার থানা পুলিশ আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে একটি ম্যাসেজ পৌঁছায় দিয়েছে। মেসেজটি হলো— বুধবার রাত ৮টার পর কোনো আবাসিক ও খাবার হোটেল খোলা রাখা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশ বলবৎ থাকবে।

রাজধানীর পুরানা পল্টন, নয়া পল্টন, বিজয়নগর, কার্লভাট রোড, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, নাইটিঙ্গেল মোড়, বায়তুল মোকাররম এলাকা, দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিল, আরামবাগ, সেগুন বাগিচাসহ আশেপাশের এলাকার খাবার হোটেলগুলো বন্ধ রাখাতে পুলিশের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। খাবার হোটেল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তাদের কোনো লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তবে মৌখিকভাবে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কত দিন বন্ধ রাখতে বলেছে পুলিশ জানতে চাইলে বেশিরভাগই বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তোপখানা রোডের বৈশাখী হোটেলের একজন সহকারী ম্যানেজার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ (বুধবার) রাত ৮টা থেকে আগামী রাত পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলেছে আপাতত। তবে পরবর্তী পরিস্থিতি বুঝে হোটেল খুলতে বলেছে পুলিশ। তাই আমরা আগামীকাল হোটেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বায়তুল মোকাররমের উত্তর পাশে সড়কে অবস্থিত খানা বাসমতি হোটেলের একজন ম্যানেজার বলেন, ‘খানা বাসমতি হোটেল কোনো দিন বন্ধ থাকে না। এরপরও আজ রাতের পর বন্ধ থাকবে। কারণ পুলিশ বলে গেছে হোটেল বন্ধ রাখতে।’

মতিঝিলের হীরা ঝিল হোটেলের ম্যানেজার সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘হোটেল বন্ধ রাখতে বলেছে পুলিশ। পরিস্থিতি বুঝে হোটেল খোলার সিদ্ধান্ত দেবে পুলিশ। তবে তারা বিষয়টি মালিককে জানিয়েছেন। মালিক বন্ধ রাখবে কি না তা তিনি জানেন না।’

অন্যদিকে ফকিরাপুল মোড়ে অবস্থিত গাউছিয়া হোটেলের ম্যানেজার সুজন মিয়া বলেন, ‘পুলিশ কড়া ভাষায় বলে গেছে ৮টার পর হোটেল যেন খোলা না থাকে। আগামীকাল সারাদিন হোটেলের শাটারও খোলা যাবে না। এরপর কবে খুলবে তা জানাবে পুলিশ। তাই আজ রাত থেকে হোটেল বন্ধ রাখা হবে।’

শুধু খাবার হোটেলই নয় বরং পল্টন মতিঝিল এলাকার সকল আবাসিক হোটেলও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পল্টন থানার একজন পুলিশ পরিদর্শক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মৌখিকভাবে খাবার হোটেল ও আবাসিক হোটেল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এটা করা হয়েছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে।’

ফকিরাপুলের অধিকাংশ আবাসিক হোটেলে গত কয়েকদিন ধরে বর্ডার নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন হোটেল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। তারা বলেন, ‘যাদের সিট দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেককে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এজন্য ঝামেলা এড়াতে কাউকে সিট দেওয়া হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা অনেককে সতর্ক করেছি যাতে কোনো সন্ত্রাসী বা দুর্বৃত্ত হোটেলে ঢুকতে না পারে। তবে কোনো কিছু একেবারই বন্ধ করতে বলা হয়নি।’

জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা জনভোগান্তি এড়াতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন কেউ হোটেলে উঠল আর বাইরে বড় ধরনের গণ্ডোগোল শুরু হলো। তখন নিরীহ অনেকে ঝামেলায় পড়ে যায়। সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তাই কেউ যদি নিজে থেকে খাবার হোটেল ও আবাসিক হোটেল বন্ধ রাখে তাহলে সেটা তাদের নিরাপত্তার জন্য করেছে। এতে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই।’

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর