‘ঘরে ঘরে পূর্ণিমা দেখতে চাই না’
২৮ জুলাই ২০২৩ ২১:৫৫
ঢাকা: ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের অত্যাচারের প্রসঙ্গ তুলে পূর্ণিমা রাণী শীল বলেছেন, আমি যে অন্যায়-অপরাধের শিকার হয়েছি। আমাকে আপনারা একটু বোঝার চেষ্টা করুন। আগুন সন্ত্রাসী, শয়তান এদের কখনও জায়গা দেবেন না। আপনাদের কাছে ছোট বোন হিসেবে আকুতি-মিনতি করতে এসেছি। আমি ঘরে ঘরে পূর্ণিমা দেখতে চাই না।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদের দক্ষিণ গেটে ক্ষমতাসীন দলটির তিন সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপি-জামায়াতের হত্যা-সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি একথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী বিএনপি-জামাতের পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হওয়া সেই ১৪ বছরের পূর্ণিমা রাণী শীল তার ঘটনার স্মৃতিচারণ করে বিএনপি-জামায়াতকে ধিক্কার জানান। তিনি বলেন, ‘ধাক্কা খাইতে খাইতে নৌকা অনেক শিক্ষা পেয়েছে। এখন আমাদের এই শিক্ষা প্রয়োগ করার সময় এসেছে। আমি আমার ভাইবোনদের কাছে অনুরোধ নিয়ে এসেছি। দীর্ঘ ১৫ বছর বাংলাদেশের নারী-সমাজ ভাইবোন, আত্মীয়-স্বজন সবাই কিন্তু স্বাধীনভাবে সুন্দরভাবে পথ চলতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা কাঁচা চুলে বিধবা হয়েছে। আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমার বাল্যজীবনটা হারিয়েছি। আমার হাত থেকে খাতা কলম, বাল্য জীবনটা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। কই! তখন তো তারা আমার পাশে এসে দাঁড়ায়নি? তারেক রহমান আজ কোথায়? কেমন করে বলেন মানবতার কথা? আপনার কি লজ্জা হয় না?’
শুধু মেকআপ লিপস্টিক মারা মহিলাদেরকে নিয়ে ফুর্তি করা, হাওয়া ভবনে থাকা, এই ধরনের পুরুষের মুখে কখনোই মানবতা মানায় না। আপনি একটা চর্মরোগ। তারেক রহমান বাংলাদেশের জন্য চর্মরোগ। এই চর্মরোগকে ঝাড়ু আর জুতাপেটা করে বাংলারে মাটি থেকে তাড়াতে হবে। বিদেশের মাটিতে হাওয়া লাগিয়ে সুন্দর করে ডায়ালগ দেওয়া যায় না বলেও জানান তিনি।
‘আপনাদের কাছে ছোট বোন হিসেবে আকুতি মিনতি করতে এসেছি। আমি ঘরে ঘরে পূর্ণিমা দেখতে চাই না। আপনারা দেখেছেন? আমার মা এখনোও কেমন আছে? আমি কেমন আছি? বর্তমান দেখেছেন অতীত দেখেননি’ বলে জানান পূর্ণিমা।
পূর্ণিমা বলেন, ‘নৌকায় ভোট দেওয়া ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের অপরাধ। সেই অপরাধ ঢাকতে গিয়ে কিন্তু আমাদের দিনের পর দিন আমাদের জীবন দিতে হয়েছে। রক্ত দিতে হয়েছে, ইজ্জত দিতে হয়েছে, ভাই-বোনদের প্রাণ দিতে হয়েছে।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম।
আয়োজক সংগঠনের পক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ যৌথভাবে পরিচালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
সারাবাংলা/এনআর/একে