Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২ আগস্ট রংপুর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

রাব্বী হাসান সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৯ জুলাই ২০২৩ ১৯:৫২

রংপুর: আগামী বুধবার (২ আগস্ট) রংপুর যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দাবি পূরণের আশায় বুক বেধেছেন রংপুরের মানুষ। সফরে গিয়ে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধনের পাশাপাশি থাকবে নতুন প্রতিশ্রুতিও। সেদিন রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি। জাতীয় নির্বাচনের আগে রংপুর থেকেই নির্বাচনী সমাবেশ শুরু করছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। সমাবেশ থেকে তিনি নেতাকর্মী ও জনগণের উদ্দেশ্যে নির্দেশনামূলক বক্তব্যও দিবেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে একাধিক নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে গিয়েছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। তখন তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভা করেন। এরপরে আর তিনি রংপুরে যাননি। সাড়ে ৪ বছরের বেশি সময় পর প্রধানমন্ত্রী রংপুরে যাচ্ছেন। এ নিয়ে উজ্জীবিত হয়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা।

রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একে এম ছায়াদত হোসেন বকুল বলেন, ‘জনসভায় ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জনসভায় রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় বর্ধিত সভা করা হয়েছে। ওই সভায় ৪ মন্ত্রীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আমরা বর্তমান সরকারের আমলে রংপুরের যে সব উন্নয়ন হয়েছে এসবও জনগণের নিকট তুলে ধরছি।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি জিলা স্কুল মাঠে জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই থেকে প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন আর উন্নয়নের মোড়কে এক সময়ের ‘মঙ্গাপীড়িত’ রংপুরকে বদলে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ২ আগস্ট আওয়ামী লীগ আয়োজিত রংপুর জিলা স্কুল মাঠের বিভাগীয় মহাসমাবেশ থেকে বিভাগের ৩০টি উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে রংপুর বিভাগের জনসভা হবে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন কেন্দ্রিক প্রথম জনসভা। এ জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন পাশাপাশি রংপুর বিভাগের মানুষকে চমক দেবেন।’

বিজ্ঞাপন

সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাইতে হয় না, তিনি খোঁজ খবর নেন। তিনি জানেন কখন কী করতে হবে। রংপুরবাসী না চাইতেই উনার কাছে অনেক কিছু পেয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরের পুত্রবধূ হিসেবে রংপুরের উন্নয়ন নিজ কাঁধে নিয়েছিলেন এবং উন্নয়নের মধ্যদিয়ে রংপুরকে বদলে দিয়েছেন। এবারও তিনি রংপুরকে সুখবর দিবেন। এখন আমাদের রংপুরের পক্ষ থেকে দেওয়ার পালা। সেই সুযোগ এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করে উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবে রংপুরবাসী, আমরা সেই প্রত্যাশা করছি এবং সেই অপেক্ষায় রয়েছি। আশা করছি, স্মরণকালের সমাবেশ উপহার দিয়ে দেখিয়ে দিবে গোটা বাংলাদেশকে রংপুরবাসী।’

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফরকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে আশায় বুক বাঁধছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ। তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষ এবং তিস্তা নিয়ে যারা আন্দোলন করে আসছেন, তাদের আশা প্রধানমন্ত্রী রংপুরের জনসভায় বহু আকাঙ্ক্ষিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সুখবর নিশ্চয়ই দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান।

তিনি বলেন, ‘পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় তিস্তা এখন উত্তরের মানুষের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর বন্যা এবং খরায় নদীপাড়ের মানুষের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তিস্তার দুই পাড়ের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে পারে একমাত্র মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে তিস্তা পাড়ের মানুষের পানির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।’

প্রধানমন্ত্রীর রংপুর সফর প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি বলেন,‘ প্রধানমন্ত্রী রংপুরবাসীকে আবারো উন্নয়নের সুখবর নিজের মুখে দেবেন। আজ থেকে ১১ বছর আগে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে প্রধানমন্ত্রী জনসভায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি তা পালনও করেছেন। তিনি আবারও রংপুরে আসছেন, উত্তরবঙ্গের দায়িত্ব যেহেতু নিয়েছেন আমাদের সামনের চাওয়াগুলোও তিনি পূরণ করবেন।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে দলের পক্ষ থেকে কোন চাওয়া আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘চাওয়ার তো অনেক আছে সবচেয়ে বড় চাওয়া সেটি হচ্ছে তিস্তার মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন। নদীর দুইপাড়ের মানুষের দুঃখ দুর্দশা ঘোচাতে এটাই সবচেয়ে বড় চাওয়া। এছাড়াও গ্যাস যাতে দ্রুত দেয়া যায়, ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন করা, অর্থনৈতিক জোন করা এবং যে রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে সেটা যাতে দ্রুত শেষ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উত্তরের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেক কিছুই চাওয়ার আছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তা ঘোষণা দেবেন।’

সারাবাংলা/ইআ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর