জাতীয় মেডিকেল বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত
২৯ জুলাই ২০২৩ ২১:৩১
ঢাকা: ‘মননে তারুণ্য, ধমনীতে যুক্তি, সেবার আবেশেই, মিলবে মুক্তি’ এই স্লোগান সামনে রেখে হয়ে গেল জাতীয় মেডিকেল বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২৩। আয়োজনে ছিল বাংলাদেশের বিতর্ক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সংগঠন ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন বাংলাদেশ (এনডিএফ বিডি) এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) ও শনিবার (২৯ জুলাই) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে দুদিনব্যাপী এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিশাল এই আয়োজনে সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজ-এর শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন ডাক্তার, শিক্ষকসহ হাজারের বেশি প্রতিযোগী অংশ নেন।
আয়োজনের ১ম দিনে শুক্রবার সকালের অধিবেশনে ছিল বর্ণাঢ্য র্যালি, যা কলেজ প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে। এরপর ৯টা ৩০ মিনিটে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিহেলথ ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হোসেন, বিসিএস হেলথ ক্যাডার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ‘ইউনিমেড ইউনিহেলথ ৮ম এনডিএফ বিডি– শসোমেক জাতীয় মেডিকেল বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক উৎসব-২০২৩-এর সমন্বয়ক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ-এর অধ্যাপক ডা. এ এম সেলিম রেজা, এবং আয়োজনের চিফ কনভেনর ডা. সুকন্যা প্রীতি ঊষা প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন-এর চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সভাপতি একেম শোয়েব।
এবারের আয়োজনে মেডিকেল সেক্টরে বিশেষ অবদানের জন্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এবিএম মাকসুদুল আলমকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই প্রিলিমিনারি রাউন্ডের বিতর্ক প্রতিযোগিতা শুরু হয়। একই সময়ে মূল ভেন্যুতে কবিতা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন ময়নামতি মেডিকেল কলেজের তাসনিম জাহান বর্ণ, ২য় স্থান অধিকার করেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ঈশতিয়াক আহম্মেদ, ৩য় স্থান অধিকার করেন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের হৃতিক হালদার শাওন।
দুপুরের নামাজ এবং খাবারের বিরতির পর শুরু হয় আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গানের প্রতিযোগিতা। এতে ১ম স্থান অধিকার করেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী শাওরিম ইসলাম সেমন্তি, ২য় স্থান অধিকার করেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ মাইশা মহুয়া অউরিন, ৩য় স্থান অধিকার করেন বারিদ মেডিকেল কলেজের স্টেলা নাওমি বিশ্বাস।
দেশাত্মবোধক গানের প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন ইউনিভার্সিটি ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী প্রিয়া দাস, ২য় স্থান অধিকার করেন প্রাইম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ডক্টর সোমাশ্রী সরকার, ৩য় স্থান অধিকার করেন গাজী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী স্বর্ণা মন্ডল।
সন্ধ্যার পর মিউজিক ভিডিও প্রতিযোগিতায় (টিম পারফরম্যান্স) চ্যাম্পিয়ন হয় প্রাইম মেডিকেল কলেজ এবং রানারআপ হয় ঢাকা ডেন্টাল কলেজ । রাত ৮টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ১ম দিনের আয়োজন সম্পূর্ণ হয় ।
অনুষ্ঠানের ২য় দিন ২৯ জুলাই (শনিবার) সকাল ১১টায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পর্বের বিতর্ক, নৃত্য প্রতিযোগিতা, অভিনয় প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, বারোয়ারি প্রতিযোগিতা, ইংলিশ পাবলিক স্পিকিং, সেমিফাইনাল বিতর্ক এবং চিকিৎসা বিষয়ক সেমিনার।
নৃত্য প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাহাত খান, ২য় স্থান অধিকার করেন প্রাইম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী প্রিতয়নসা গুরসাহান, এবং ৩য় স্থান অধিকার করেন গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজের চান্ত্রেই দাস প্রমুখ।
কুইজ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, রানারআপ হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ এবং ৩য় হয়েছে কুমিল্লার ময়নামতি মেডিকেল কলেজ।
বাংলা বারোয়ারি প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন হামদার্দ ইউনানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদা আক্তার, ২য় স্থান অধিকার করেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মির্জা আলভী এবং ৩য় স্থান অধিকার করেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মুবাসসিরা তাসনিম।
ইংলিশ পাবলিক স্পিকিং প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেন ঢাকা ডেন্টাল কলেজের গারিমা, ২য় স্থান অধিকার করেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মুকাররবিন হক নিবিড় এবং ৩য় স্থান অধিকার করেন গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তানিশা আহমেদ।
দুপুরের নামাজ ও খাবারের বিরতির পর দুপুরে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন ও ফাইনাল বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেমি ফাইনাল বিতর্কে অংশগ্রহণ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সালিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল এবং গাজী মেডিকেল কলেজ, খুলনা এবং চুড়ান্ত বিতর্কে অংশগ্রহণ করে, গাজী মেডিকেল কলেজ বনাম শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ।
সন্ধ্যা ৭টা’য় সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফারমাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান এম মোসাদ্দেক হোসেন, স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রাপ্ত অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তানজিদ, বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক উৎসব-২০২৩-এর সমন্বয়ক শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ-এর অধ্যাপক ডা. এ এম সেলিম রেজা, বিশিষ্ট বিতার্কিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি আব্দুন নূর তুষার এবং আয়োজনের চিফ কনভেনর ডা. সুকন্যা প্রীতি ঊষা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ –এর অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এবিএম মাকসুদুল আলম।
সারাবাংলা/আরএফ/একে