আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর হামলার অভিযোগ
৩০ জুলাই ২০২৩ ১৯:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের দুই দফা হামলার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনার পর ওই প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (৩০ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই প্রার্থীর নাম আরমান আলী। তিনি বেলুন মার্কা নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন।
আরমান আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাড়ি ফইল্ল্যাতলী এলাকায়। তাই সকাল থেকে আমার এলাকার মানুষরা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারছে কিনা দেখতে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করছিলাম। পরে আওয়ামী লীগ নেতা এম আর আজিম ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবুর নেতৃত্বে নগরীর ফইল্যাতলী বাজারে অবস্থিত প্রাণহরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ডা. ফজলুল হাজারা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে আমার ওপর দুই দফা হামলা হয়।’
এসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
আরমান বলেন, ‘আমাকে যখন তারা মারছিলো তখন মহিউদ্দিন বাচ্চু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে পুলিশও ছিলো। তবে তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে আমি কল দিয়ে বিজিবি ডেকে আনি। তারাই আমাকে নিরাপদে বাসায় পৌঁছে দেন। তারা আমার ও নির্বাচনী এজেন্টের মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমার শার্ট ছিঁড়ে ফেলেছে।’
কেন্দ্রগুলোতে নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর ভোটার ভোট দিতে পারছে না অভিযোগ করে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, ‘১০টি কেন্দ্রে আমার পোলিং এজেন্ট ছিল। তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নৌকার প্রার্থী ছাড়া অন্য কাউকে ভোটাররা ভোট দিতে পারছেন না। শুধু নৌকার ভোটাররাই ভোট দিতে পারছেন। এই নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না। তাই আমি এই নির্বাচন বয়কট করলাম।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি কোনো হামলা বা মারামারির বিষয় শুনিনি। আর আমার সঙ্গে ওনার দেখাই হয়নি। এসব সাজানো কথা। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরিদর্শনের সময় লাঙ্গল মার্কা ও ছড়ি মার্কার দুই প্রার্থীর সাথে দেখা হয়ছে। তারা কোলাকুলি করেছেন। সেলফি তুলেছেন।’
নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘উপনির্বাচনে আমার ১১,১২ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড দেখা শুনার দায়িত্ব পড়েছে। আমি তো এই ওয়ার্ডের ভোটারই নয়। উনার উপর হামলার যে অভিযোগ সেটা পুরোটিই মিথ্যা। আমি তো একাই ছিলাম। পেছনে কি হয়েছে না হয়েছে সাথে আমি জানি না।’
জানতে চাইলে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এরকম কোনো কিছু আমি শুনিনি। সাংবাদিকরা কল দিয়েই জানালো। এরপর আমি ওখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য ও নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসারকে জিজ্ঞেস করি। তারাও কিছু জানে না জানালো।’
চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলম (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।
গত ২ জুন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদের এই আসনটি শূন্য হয়।
সারাবাংলা/আইসি/একে