‘ডেঙ্গু নিধনে বিশ্বস্বীকৃত পদ্ধতি অনুসরণ করছি’

ঢাকা: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ডেঙ্গু শুধু আমাদের দেশে আছে তা নয়, অন্যান্য দেশেও আছে। সব ট্রপিক্যাল কান্ট্রি, সব দেশেই এই রোগ আছে। বহির্বিশ্বের প্রেক্ষাপটে আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনা যেভাবে সাজিয়েছি। ডেঙ্গু নিধনে আমরা যে পদ্ধতি অনুসরণ করছি তা বিশ্বস্বীকৃত।

রোববার (৩০ জুলাই) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবনে মেয়র মো. হানিফ মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদারকরণ বিষয়ক এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছিলেন মন্ত্রী।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বক্তব্য দেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ডেঙ্গু প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ ক্ষেত্রে পাড়া মহল্লা ভিত্তিক ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পরিচ্ছন্নতা কমিটি গঠন করতে হবে। ডেঙ্গু মশা যাতে প্রজনন করতে না পারে, লার্ভা বিস্তার না করে সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ সময় শুক্রবারের খুৎবায় এডিস মশা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার বিষয়ে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আহবান জানান তিনি।

এছাড়াও বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকদেরও ডেঙ্গু প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ডেঙ্গু সারা বছর সংক্রমণের সম্ভাবনা সারা বিশ্বেই বৃদ্ধি পাচ্ছে তাই আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি।

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলনের নামে দেশকে অচল করতে চায় তাদের জানা উচিত ১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতা দেশকে সচল করার জন্যই হয়েছে। আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।

আওয়ামী লীগ ছাড় দিচ্ছে দেশের মানুষের শান্তির জন্য মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, তবে আন্দোলনের নামে জনদুর্ভোগ ও অগ্নি সন্ত্রাস কোনভাবেই সহ্য করা হবে না।

ঢালাওভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা হয় উল্লেখ করে সভায় ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, চলতি বছর ২২ শে জুলাই সারা বাংলাদেশে ২ হাজার ২৪২ জন রোগী পাওয়া গেছে। সেখানে আমাদের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫৫ জন রোগী আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। ১৫৫ জনের ঠিকানাতে, স্থাপনাতে কার্যক্রম (ডেঙ্গু রোগীর আবাসস্থল ও তৎসংলগ্ন আশপাশের ৪০০ গজের মধ্যে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে) নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য স্থাপনাতেও কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। ২৩ তারিখে দেশব্যাপী রোগী ছিল ২ হাজার ২৯২ জন। সেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১২২ জন। ২৪ তারিখে সারা বাংলাদেশ ২ হাজার ২৯৩ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার রোগী ১৩৩ জন। ২৫শে জুলাই সারাদেশে ২ হাজার ৪১৮ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকায় ১২২ জন। ২৬ শে জুলাই সারাদেশে ২ হাজার ৬৫৩ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১২৩ জন। ২৭শে জুলাই সারাদেশে ২ হাজার ২৬১ জন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১০০ জন।

মেয়র বলেন, আমাদের কার্যক্রম যে সফল হয়েছে, ঢাকাবাসী যে সুফল পাচ্ছে, এটি তারই নিদর্শন। আমরা এই পর্যায়ে আমাদের রোগীর সংখ্যা ১০০-১৫০ এর ঘরে রাখতে পেরেছি। এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে আমাদের কর্মীবাহিনীর নিরলস পরিশ্রমের জন্য।

সভায় ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির ঢাকা দক্ষিণে ডেঙ্গু প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উপর সচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন।

সারাবাংলা/আরএফ/এনইউ

টপ নিউজ ডেঙ্গু নিধন পদ্ধতি বিশ্বস্বীকৃত