Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি হাইকোর্টে খালাস, একজনের যাবজ্জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ আগস্ট ২০২৩ ২৩:২৬

ফাইল ছবি

ঢাকা: মানিকগঞ্জের সিংগাইরে উমা দেবী (৭০) নামে এক নারীকে হত্যার ঘটনায় অধঃস্তন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামির সাজা কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. ইসহাক ভূঁইয়া, ইমান আলী ফকির, বাচ্চু, মো. শহিদুল ইসলাম। আর মৃত্যুদণ্ড থেকে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন মো, নান্নু মিয়া (পলাতক)।

ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা ও সৈয়দা ফারাহ হেলাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, এ ঘটনায় কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নেই। আসামিদের স্বীকারোমূলক জবানবন্দি দিলেও সেখানে ডাকাতির ঘটনা উল্লেখ নেই। কিন্তু মামলার বাদী ডাকাতির ঘটনায় স্বর্ণালংকার লুট এরপর হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তারা কোন স্বর্ণালংকার উদ্ধার করতে পারেনি। এ ছাড়া তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিতেও আসেনি। এ মামলার তদন্তে বিস্তর ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে।

আইনজীবী আরও বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তার ত্রুটিপূর্ণ তদন্ত এবং অবহেলায় কারণেই আসামিরা খালাস পেয়েছেন। তা না হলে মামলায় এ রকম পরিণতি হতো না।’

তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী সারাবাংলাকে বলেন, ‘৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা উমা দেবীকে হত্যার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামিকে খালাস এবং একজনের দণ্ড কমে যাবজ্জীবন হওয়ায় আমরা অসন্তুষ্ট। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।’

মামলার এজাহারে সূত্রে জানা হয়, মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌরসভায় ছানোয়ারের বাড়িতে ভাড়াটিয়া থাকা অবস্থায় ২০১০ সালের ৯ আগস্ট সুবোধ চক্রবর্তীর স্ত্রী উমা দেবীকে (৭০) হত্যা করা হয়েছে। তাকে পা দুটি গামছা দিয়া বেঁধে, গলায় লুঙ্গি দিয়ে পেঁচিয়ে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে অজ্ঞাতনামা আসামিরা তাকে হত্যা করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়‌। এ ঘটনার পরদিন ২০১০ সালের ১০ আগস্ট উমা দেবীর ছেলে মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বাদী হয়ে সিংগাইর থানায় এজাহার দায়ের করেন।

পরে পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। এবং তাদের আসামি করে আদালতে পাঠান। পরবর্তীতে আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর ২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর আদালত অভিযোগ গঠন করেন।

পরবর্তীতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৭ সালের ৬ জুন পাঁচ আসামির প্রত্যেকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত।

মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আল-মাহমুদ ফায়জুল কবীর এ রায় দেন।

এরপর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে আসামিরা জেল আপিল এবং আপিল দায়ের করেন।

দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আদালত ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে অধঃস্তন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে খালাস দিয়েছেন এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক অপর এক আসামির দণ্ড কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

টপ নিউজ হাইকোর্ট


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর