জনগণই আমাদের প্রভু: প্রধানমন্ত্রী
৬ আগস্ট ২০২৩ ১২:৪৩
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের শক্তিই হচ্ছে আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নেই। জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু।
রোববার (৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাদের উদ্দেশে বলেন, সবাই একযোগে কাজ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে, আপনারা সেই প্রচেষ্টা চালাবেন। জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়ন করে তার প্রিয় জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই উন্নয়নের কথাগুলো সাধারণ মানুষের কাছে আপনাদের বলতে হবে। কারণ বারবার না বললে মানুষের মনে থাকে না। দুঃখ কষ্টের দিনগুলি মানুষ তো সুখ পেলে ভুলে যায়। আগে কি অবস্থায় ছিল?
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারে, কাজ করতে পারে, কাজ পায়। আমরা বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। বিনা জামানতে দুই লাখ টাকা তারা লোন নিতে পারে। ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারে। এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিশেষ ছাড় দিয়ে টাকা পয়সা দেওয়া হচ্ছে যাতে ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারে।
আমরা স্টার্ট আপ প্রোগ্রাম করেছি। যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে প্রতিটি শ্রেণিপেশার মানুষ তাদের জন্য আওয়ামী লীগই কাজ করেছে। আগে অন্য কেউ কোনদিন এই মানুষগুলোর কথা ভাবেওনি, কাজ করেওনি। তাই সেই কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
তিনি বলেন, এই দেশের কামার-কুমার-জেলে-তাঁতী কোনো শ্রেণি পেশার মানুষ নেই যাদের ভাগ্য পরিবর্তনে আওয়ামী লীগ কাজ করে নাই। আমরা সবার জন্য কাজ করেছি, কাজ করব। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুর্নব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের উন্নয়নের ধারায় যে পরিবর্তনটা এনেছি সেই তথ্যগুলি আপনাদের কাছে দেব, আপনারা এইগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন এবং সেই সাথে সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন।
তিনি বলেন, মানুষের শক্তিই হচ্ছে আওয়ামী লীগের শক্তি। আওয়ামী লীগের কোনো প্রভু নাই। জনগণই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রভু। জনগণের কাছে আমরা দায়বদ্ধ। জনগণের কল্যাণে কাজ করি। কতটুকু করতে পেরেছি আর ভবিষ্যতে কি করব সেইটুকুই আমরা জনগণকে জানাই। এছাড়া আর কাউকে না। একথাটা মাথায় রাখবেন এবং সবাই মিলেমিশে কাজ করবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি আজকে আপনাদের কাছে শুনব। তবে জানি সবাইকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে পারব না। প্রত্যেক বিভাগ থেকে জেলা থেকে এবং উপজেলা থেকে আমরা একটা একটা ভাগ করে সবার কাছ থেকে বক্তব্য শুনব। সেইভাবেই আমরা প্রোগ্রাম করেছি। তাছাড়া এখন তো ডিজিটাল যুগ আছেই সমানে আমাকে এসএমএস পাঠাতে থাকেন। আমিও পরে দেখি যেটা প্রয়োজন উত্তরও দেই। এইজন্য ফোনও অনেক সময় লক হয়ে যায়। সেটা তো হয়ই। তবু ভাল লাগে অন্তত তথ্যগুলি জানতে পারি।
গণভবনে উপস্থিত নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার আদর্শ আছে। আজকে দিনটা কিন্তু আরেকটা কারণে স্মরণীয়। আপনারা জানেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুবার্ষিকী এই দিনে। তিনি এই শ্রাবণ মাসেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নজরুল তিনজনই কিন্ত এই শ্রাবণ মাসেই আমাদের ছেড়ে চলে যান।
বর্ধিত সভায় যারা উপস্থিত আছেন এবং যারা উপস্থিত হতে পারেননি তাদের সবার প্রতি শুভ কামনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাই একযোগে কাজ করে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের গতিধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে, আপনারা সেই প্রচেষ্টা চালাবেন। জাতির পিতার যে আদর্শ, সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করে জাতির পিতার প্রিয় জনগণ তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
বিশেষ বর্ধিত সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, জেলা ও মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর (জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সংসদের দলীয় সদস্য, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত আছেন। সভায় উপস্থিত আছেন সারা দেশ থেকে প্রায় তিন হাজার নেতা ও জনপ্রতিনিধি।
সারাবাংলা/এনআর/এনইউ