রাঙ্গামাটিতে ৩৮১টি বসতঘর বিধ্বস্ত, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল
৭ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৪
রাঙ্গামাটি: কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের ফলে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া টানা পাঁচ দিনের ভারি বর্ষণে জেলার ১৯৭টি স্থানে ছোট-বড় ভাঙন ও পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড় ধসের কারণে জেলায় ৩৮১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আশ্রয়ণের ঘরও রয়েছে ১৩টি। এসব ধসের কারণে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন একজন। সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন এসব তথ্য জানিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, ১৪টি ব্রিজ-কালভার্ট, ১৬টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং জেলার ৬৮৩ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কসহ জেলার ৭৫টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে নয়টি স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১২৪টি ঘর ও পাঁচটি হাটবাজার পানিতে ডুবে আছে। জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন ও জুরাছড়ির চারটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, তীব্র স্রোতের কারণে বন্ধ রয়েছে চন্দ্রঘোনা ফেরি। জেলায় সোমবার পর্যন্ত মোট ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ সব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১ হাজার ৭২৭ জন মানুষ।
জানতে চাইলে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলায় পানিতে ডুবে একজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাকে উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।’
এদিকে, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলা শহরের মানিকছড়ি এলাকায় জাতীয় গ্রিডের ৩৩ কেভি ভোল্টের লাইনে গাছ পড়ে বিকেল পুরো রাঙ্গামাটি শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা ৭টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুরো রাঙ্গামাটি শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। শহরে বিদ্যুৎ সরবারহ চালু হতে রাত ৯টা লাগতে পারে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) রাঙ্গামাটি বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, ‘জেলা শহরের মানিকছড়ি এলাকায় জাতীয় গ্রিডের সোর্স লাইনে একটি বড় গাছ পড়েছে। এতে করে পুরো শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন গাছ কাটার কাজ চলছে। গাছ কাটা শেষে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন মেরামত করতে হবে। সরবরাহ লাইন সঞ্চালনের পরেই বিদ্যুৎ দেওয়া যাবে।’
রাঙ্গামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক ক্য চিং নু মারমা বলেন, ‘সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। রোববার ২৪ ঘণ্টায় ১৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়ে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটিতে ৯৪ মিলিমিটার, শুক্রবার ৭৭ দশমিক ২ মিলিমিটার এবং শনিবার ১৪৬ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।’
সারাবাংলা/পিটিএম