বঙ্গোপসাগরে তীব্র ঢেউ, ভাঙছে মেরিন ড্রাইভ
৮ আগস্ট ২০২৩ ০৮:৪৭
কক্সবাজার: কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের ভাঙন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গত ৩ দিন ধরে সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে সড়কটির অন্তত ১০ থেকে ১৫টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে জোয়ারের পানি কমতে শুরু করায় নতুন করে কোথাও ভাঙনের সৃষ্টি হয়নি। প্রতি বছর অব্যাহত ভাঙনের ফলে লোকালয়ে সাগরের পানি প্রবেশের আশংকার পাশাপাশি ভ্রমণে সমস্যা হওয়ায় উদ্বিগ্ন পর্যটকসহ স্থানীয়রা।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বালিভর্তি জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পানির উচ্চতা না কমা পর্যন্ত ভাঙন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, একপাশে সমুদ্র অন্যপাশে পাহাড়। প্রকৃতির নয়নাভিরাম অপার সৌন্দর্য্যের মেলবন্ধন দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ। ভ্রমনে আসা যে কারও মনে কেড়ে নেয় এই সৌন্দর্য্য। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের কারণে তীব্র ঢেউয়ের আঘাতে সড়কটির অন্তত ১০ থেকে ১৫টি স্থান ভেঙে যাচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে হাদুরছড়া বিজিবি ক্যাম্প শ্মশান পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কটিতে ভাঙন অব্যাহত। এতে লোকালয়ে পানি প্রবেশের হুমকির মধ্যে রয়েছে ২ হাজারেরও বেশি পরিবার।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, অন্য বছরের চেয়ে এ বছরের ভাঙন তীব্র ও আগ্রাসী। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোনো মুহূর্তে সড়কটি বিলীন হয়ে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশের আশংকা রয়েছে।
পরিবার নিয়ে ভ্রমণে আসা মতিউর রহমান সোহাগ নামে এক পর্যটক জানান, সড়কটিতে ঘুরতে এসে ভাঙনের কারণে সৌন্দর্য্যের বিপর্যস্ততা দেখতে হয়েছে। আকর্ষণীয় এ সড়কটি রক্ষার পাশাপাশি দ্রুত সংস্কার করার দাবিও জানান তিনি।
কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বৈরি আবহাওয়ার কারণে মেরিন ড্রাইভ ভাঙনের কবলে পড়ে। প্রতিবারই বালিভর্তি জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধে চেষ্টা চালানো হয় কিন্তু তাতে স্থায়ী সমাধান আসে না। তাই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মেরিন ড্রাইভটি রক্ষায় টেকসই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা টেকনাফ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ভাঙন থেকে রক্ষায় মেরিন ড্রাইভের দেখভালের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগের বিশেষ ইউনিট জিওব্যাগ ফেলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জোয়ারের পানির তীব্রতা না কমা পর্যন্ত ভাঙন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। তাই ভাঙনের কবল থেকে সড়করক্ষায় টেকসই ও স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এমও