Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহাসড়ক প্লাবিত, কক্সবাজার-বান্দরবান প্রায় বিচ্ছিন্ন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ আগস্ট ২০২৩ ১৮:০১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: অতি ভারী বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে চন্দনাশ উপজেলা ও সাতকানিয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বেশকিছু অংশ ডুবে গেছে। ফলে কক্সবাজার ও বান্দরবান অভিমুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দুই উপজেলায় প্রায় আট লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।

সোমবার (৭ আগস্ট) রাত থেকে পানি বেড়ে চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ায় মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়ে পড়ে। পানির ভেতর চলতে গিয়ে কয়েকটি বাস মহাসড়কেই নষ্ট হয়ে যায়। রাত তিনটার পর থেকে কার্যত কক্সবাজার ও বান্দরবানের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত চন্দনাইশের হাশিমপুর বড়পাড়া থেকে কসাইপাড়া হয়ে সাতকানিয়ার কেরাণীহাট পর্যন্ত মহাসড়ক পানির নিচে তলিয়ে আছে। চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কে সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া অংশ পানিতে তলিয়ে আছে। বিভিন্নস্থানে আটকে আছে দূরপাল্লার বাসসহ আরও বেশকিছু যানবাহন। এসব যানবাহনে থাকা নারী ও শিশুসহ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

চন্দনাইশ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিমরান মোহাম্মদ সায়েক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মহাসড়কে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি উঠে গেছে। হাশিমপুরের বড়পাড়া, কসাইপাড়ায় পানিতে সকাল থেকে তিনটি বাস নষ্ট হয়েছে। মহাসড়কের মাঝ থেকে একটি বাস ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় কোনোভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়। কক্সবাজার-বান্দরবান থেকে আসা বাস বিভিন্নস্থানে আটকে আছে। কোনো গাড়ি বড়পাড়া-কসাইপাড়া এলাকা পার হতে পারছে না।’

দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. ইরফান বলেন, ‘চন্দনাইশের হাশিমপুর থেকে সাতকানিয়ার কেরাণীহাট রাস্তার মাথা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। পানির মধ্যে হাতেগোণা কিছু গাড়ি চলাচল করলেও বেশিরভাগ যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।’

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘কেরাণীহাট থেকে কক্সবাজারমুখী কয়েক কিলোমিটার এবং বান্দরবান অভিমুখী বাজালিয়ার প্রায় পুরো অংশ পানিতে ডুবে আছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।’

বান্দরবান থেকে চন্দনাইশে বাড়িতে ফিরতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়া ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা আরিফ উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাজালিয়া বুড়ির দোকান এলাকায় শুধু পানি আর পানি। পানির স্রোতের কারণে গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। নৌকা ছাড়া রাস্তা পার হওয়া অসম্ভব। পাঁচ-ছয় মাইল হেঁটে আসতে হয়েছে।’

এদিকে চন্দনাইশের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সারাবাংলাকে জানান, উপজেলার ধোপাছড়ি, বরকল, বৈলতল, সাতবাড়িয়া, বরমা, বরকল ইউনিয়নের সব গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। দোহাজারী পৌরসভার সব ওয়ার্ড পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। চন্দনাইশ পৌরসভার আংশিক এবং জোয়ারা, কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামও পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে জানিয়ে ইউএনও জিমরান মোহাম্মদ সায়েক বলেন, ‘আমরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সহায়তায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছি। ফসলের ক্ষেত, পুকুর, কাঁচা ঘর, গবাদি পশু ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রও পানিতে তলিয়ে গেছে।’

সাতকানিয়ার ইউএনও মিল্টন বিশ্বাস জানিয়েছেন, উপজেলার বাজালিয়া, কেওচিয়া, এওচিয়া, নলুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার লাখেরও বেশি মানুষ।

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

কক্সবাজার-বান্দরবান


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর