ভুলপথ ত্যাগ করে নির্বাচনে আসুন— বিএনপিকে নানক
৮ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৩৭
ঢাকা: বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আপনাদের ভুলপথ ত্যাগ করতে হবে। যদি সঠিক পথে, গণতন্ত্রের পথে, নির্বাচনের পথে না আসেন তাহলে বাংলার জনগণ দেশের মাটিতেই আপনাদের রাজনীতির কবর রচনা করবে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব’র জন্মদিন উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ এই আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এখন খালি দিনক্ষণ দেয়? শেখ হাসিনাকে উৎখাত করবে? কী কারণে উৎখাত করবেন? মির্জা ফখরুল সাহেব ক্ষমতায় থাকতে কী করেছেন বাংলাদেশের জন্য? ক্ষমতায় থাকতে রক্তে প্লাবিত করেছেন বাংলাদেশকে। ২০০৪ সালের আগস্ট মাসে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘কুলাঙ্গার তারেক রহমান ওই বিএনপি-জামায়াত সরকারের পাশে আরেকটি হাওয়া ভবন সরকার গঠন করেছিল। লুটপাট-সন্ত্রাসের হেডকোয়াটার সৃষ্টি করেছিল। সেই জায়গা থেকে হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে।’
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পর সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নেমে আসা অকথ্য নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক। তিনি বলেন, ‘আপনারা মায়ের সামনে মেয়েকে রেপ করেছেন। ভাইয়ের সামনে বোনকে রেপ করেছেন। আমাদের হাত কেটেছেন, পা কেটেছেন। চোখ উপড়ে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ করার অপরাধে। আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই বিএনপি এখন আইনের শাসনের কথা বলে। সেই বিএনপি এখন শোনায় মানবাধিকারের কথা, গণতন্ত্রের কথা। যারা ভোট বাক্স ছিনিয়ে নিয়েছে, যারা হ্যাঁ-না ভোট করে একশ শতাংশেরও বেশি ভোট নিয়েছিল- তারা বলে এখন গণতন্ত্রের কথা।’
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নানক বলেন, ‘সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র তো শুরু করেছিলেন ২০০৯ সাল থেকে। কিন্তু পারেন নাই। কারণ, বাংলার জনগণের জন্য শেখ হাসিনা কাজ করেছেন। শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন, পদ্মা সেতু করেছেন, উড়াল সেতু করেছেন, মেট্রোরেল করেছেন। শেখ হাসিনা বছরের প্রথম মানুষের শিশুদের হাতে হাতে বিনা পয়সায় বই পৌঁছে দেন। শেখ হাসিনা কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল। সেই বাংলাদেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ। মাছ উৎপাদনে সার্বিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি।’
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে নানক বলেন, ‘তোমাদের এই সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের সংগঠন। তার গড়া সংগঠন। এই সংগঠনের পতাকাতলে সমবেত হয়ে সাচ্চা দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ ধরে তোমারা আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনিমার্ণে এগিয়ে আসবে। তবেই শেখ রাসেলের আত্মা শান্তি পাবে।’
ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আগামী দিনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ঘোষণা দিয়েছেন। তোমরাই হবে আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নতুন স্বপ্ন উন্নত-সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তাই আমাদের সুংগঠিত হতে হবে। আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবো।’
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহিদ উল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম