Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অনাবৃষ্টিতে ফলন কম, পাটের জাগ নিয়েও শঙ্কা

ডিস্ট্রিক্ট করসেপন্ডেন্ট
৯ আগস্ট ২০২৩ ০৯:১৬

নওগাঁ: গত কয়েক দিনে টানা বৃষ্টি হলেও নওগাঁয় ভরা মৌসুমে দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে পাটের আবাদ। এদিকে পাট তোলার সময় ডোবায় পানি না থাকায় পাট জাগ (পচন ধরা) দিতেও বেগ পেতে হয়েছে চাষিদের।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরে জেলায় পাঁচ হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এর বিপরীতে হয়েছে চার হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলায় পাঁচ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫ হাজার ৭২৫ হেক্টর, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫ হাজার ৯৩৩ হেক্টর এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর পাটের আবাদ হয়েছিল। গত ৫ বছরের ব্যবধানে পাটের আবাদ কমেছে প্রায় ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর। জেলায় এ বছর প্রায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৫ মণ পাট উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৮৩ কোটি ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

তবে ফলনে কম হলেও দাম ভালো পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন চাষিরা। পরিশ্রমের তুলনায় গত কয়েক বছর থেকে পাটের দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারিয়েছিল চাষিরা। তবে গত দু’বছর থেকে আবারও চাষিরা পাটের দাম পাওয়া শুরু করেছেন। পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে প্রণোদনাসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে।

পাটকে বলা হয় সোনালি আঁশ। তবে পাটের যে সোনালি ঐতিহ্য তা হারিয়ে যেতে বসেছিল। গত দু’বছর থেকে আবারও চাষিরা পাটের দাম পাওয়া শুরু করেছে। এবার চাষিদের স্বপ্নে বাগড়া দিয়েছে অনাবৃষ্টি। জেলার সদর উপজেলা, আত্রাই, বদলগাছী ও মান্দা উপজেলা সহ অন্যান্য উপজেলার কৃষকরা পাটচাষ শুরু করেছিল। জমিতে পাটের বীজ রোপণ করা হলেও ঠিকমতো চারা গজায়নি। আবার যেসব জমিতে চারা গজিয়েছে পাট গাছ হয়েছে ফাঁকা ফাঁকা। ফলনের পরিমাণ কম হয়েছে। তবে খরচ হয়েছে একই। মৌসুমের শেষ সময়ে সামান্য বৃষ্টি হলেও তা কাজে আসেনি। উজানের ঢলে নদীতে পানি থাকলেও ডোবা, নালা ও পুকুরে পানি নেই। এতে পাট জাগ দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

চাষিরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে হালচাষ, বীজ রোপণ, সার, কীটনাশক, পানি সেচ, নিড়ানি, কাটা, জাগ দেওয়া ও শ্রমিকসহ ঘরে উঠানো পর্যন্ত খরচ পড়ে প্রায় ১৪-১৬ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ফলন হয় ৮ মন থেকে ১২ মন। পাটের আবাদ কমে যাওয়ায় গত দু বছর থেকে বেড়েছে পাটের দাম। প্রতি মন পাট গত বছর ২৮০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছর তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে চার হাজার টাকা মন দাবী কৃষকদের।

আত্রই উপজেলার শাহাগোলা গ্রামের কৃষক আক্কাস বলেন, এক বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। অনাবৃষ্টিতে গাছ বড় হতে পারেনি। আবার যেটুকু হয়েছে পাতলা হয়েছে। গতবার ২৬০০ টাকা মন বিক্রি করা হয়েছে। জমি ফেলে না রেখে পাট লাগানো হয়েছে। এবছর পাটের দাম ভালো পেলে লাভবান হওয়া সম্ভব।

সদর উপজেলার বর্ষাইল গ্রামের কৃষক আলতাফ বলেন, বৃষ্টি নাই বললেই চলে। খালে বা বিলে পানি নাই। তাই পাট জাগ দেওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, পাট চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে দুই হাজার কৃষকের প্রত্যেককে এক কেজি করে বীজ হিসেবে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন শাকসবজিসহ অন্যান্য আবাদ বেশি হওয়ার কারণে পাটের আবাদ কিছুটা কমেছে। পাটের আবাদের জন্য বেশি বৃষ্টির দরকার হয় না।

সারাবাংলা/আইই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভূতের গলির বাসায় মিলল বৃদ্ধের মরদেহ
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০০

সম্পর্কিত খবর