Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কক্সবাজারে নেমে যাচ্ছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৯ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৩৮

কক্সবাজার: কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বুধবার  (৯ আগস্ট) ভোরে হালকা বৃষ্টি হলে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না। এ পরিস্থিতিতে নামতে শুরু করেছে বন্যাকবলিত এলাকার পানি। এখন পর্যন্ত বন্ধ আছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সরাসরি যান চলাচল। তবে আনোয়ারা-বাঁশখালী-পেকুয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে যান চলাচল করছে।

এদিকে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। কোথাও মহাসড়ক, সড়ক, কাঁচা রাস্তা, আবার কোথাও কালভার্ট, ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, বেড়িবাঁধ, ঘর ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যেন লণ্ডভণ্ড হওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পানি নামলেও ঘরে ফিরতে শংকায় রয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। যে রান্না করে খাবার কোনো পরিবেশ নেই। তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির। বুধবার সকালে চকরিয়া উপজেলার পানিতে ডুবে থাকা কিছু সড়কের দৃশ্য দেখা মিলে ভাঙনের তীব্রতা। কাকড়া-মিনাবাজার সড়কের ৩ কিলোমিটার এলাকায় কমপক্ষে ৫০টি ভাঙন সড়কটিকে চলাচলের অনুপযোগী করে দিয়েছে।

স্থানীয় রহিম উদ্দিন জানান, ৪ দিন ধরে কমপক্ষে ৪-৫ ফুট পানিতে বন্দি ছিলেন তারা। পানি ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে। সাথে সাথে সড়কের ভাঙন, ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত, ফসলী জমি ও মাছের ঘেরের ক্ষতি দেখা যাচ্ছে। যাদের বাড়ি-ঘর এখনও রয়েছে তাদেরও বাড়িতে গিয়ে রান্না করার সুযোগ নেই। বাড়ির ভেতরে পানি বের করার চেষ্টা করছেন। খাবার পানিও পাওয়া যাচ্ছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, জিদ্দাবাজার-কাকারা-মানিকপুর সড়কের কয়েকটি অংশে ভাঙন রয়েছে। মাতামুহুরী নদী নিকটবর্তী গ্রামের বসতঘরগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে নানাভাবে। চকরিয়া ও পেকুয়ায় বেশ কয়েকটি বেঁড়িবাধ ভেঙে লোকালয়ে মিশে আছে পানি। চকরিয়ার পৌর শহরের শপিং কমপ্লেক্স, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পানি বের করার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

চকরিয়ার লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, সাহারবিল, চিরিঙ্গা, পূর্ব বড় ভেওলা, বিএমচর, পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, কোনাখালী, ফাঁসিয়াখালী, বদরখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী এবং পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়ন, উজানটিয়া, মগনামা, রাজাখালী, টৈটং, শিলখালী, বারবাকিয়া ইউনিয়নের পরিস্থিতিও একই।

এছাড়াও মহেশখালী, কুতুবদিয়া, উখিয়া ও রামুতে নানা ক্ষত-ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, প্রাথমিক যে তথ্য হাতে এসেছে তাতে ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি টাকার বেশি। এটা অনেক বেশি হতে পারে। এখন পর্যন্ত যে তথ্য মিলেছে, তাতে বন্যাকবলিত এলাকার মধ্যে চকরিয়া-বদরখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের ৬ কিলোমিটার, ইয়াংগা-মানিকপুর- শান্তিবাজার সড়কের ১১ কিলোমিটার, লক্ষ্যারচর-বেথুয়াবাজার-বাগগুজারা সড়কের ১১ কিলোমিটার, একতাবাজার- বনৌজা শেখ হাসিনা সড়কের আধা কিলোমিটার, বরইতলী-মগনামা সড়কের ৭ কিলোমিটার, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের আড়াই কিলোমিটার, ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ৩টি কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে। এর সঙ্গে ঘর, মাছের ঘের, বেড়িবাঁধ, ফসল, বীজতলাসহ অন্য ক্ষতি রয়েছে। যা এখনও নির্ধারণ করতে কাজ চলছে।

সারাবাংলা/জেআর/এমও

কক্সবাজার ক্ষতচিহ্ন বন্যার পানি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর