Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনার নতুন রূপ ‘এরিস’, নজরদারিতে রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ আগস্ট ২০২৩ ০৯:৪৮

ঢাকা: বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত রোগীর তথ্যগত পরিসংখ্যান বলছে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। মাঝেমধ্যে কিছু স্থানে বেশি সংখ্যায় রোগী পাওয়া গেলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস জানিয়েছিলেন, করোনার শেষের শুরু হয়ে গেছে।

কিন্তু দাপট শেষ হলেও সাম্প্রতিক সময়ে আবারও আলোচনায় কোভিড-১৯। আর আলোচনার কারণ ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট এরিস বা ইজি.৫.১। জুলাই মাসে প্রথম শনাক্ত হওয়া এই ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে।

বিজ্ঞাপন

সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নতুনভাবে ছড়ানো ওমিক্রনের এই দ্রুত সংক্রামক ক্ষমতাসম্পন্ন উপ-প্রজাতি এরিসকে ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন হিসেবে নজরদারি করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের’ বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, দেশটিতে বর্তমানে যতগুলো কোভিড কেস রয়েছে, তার ১৭ শতাংশের জন্যেই দায়ী আইরিস বা ইজি.৫.১।

একইভাবে কোভিডের আরেক ভ্যারিয়েন্ট এক্সবিবি.১.১৬-এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ শতাংশ— জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ইজি.৫ মোটেও নতুন কোনো ধরনের ভাইরাস নয়। এটির সরাসরি প্যারেন্টস বলা হচ্ছে কোভিডের এক্সবিবি.১.৯.২ ভ্যারিয়েন্টকে। এগুলো কোভিডের ওমিক্রন পরিবারেরই সদস্য। তাছাড়া মূল ওমিক্রন ধরণের মতো এটি বিশেষ কোনো বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি জানিয়েছে, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কোভিড-১৯ ডেটা ট্র্যাকারের তথ্যমতে, ইজি.৫.১ এর ফলে ২২ জুলাই পর্যন্ত দুই সপ্তাহে করোনা আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভ্যারিয়েন্টগুলো কীভাবে আস্তে আস্তে মানুষের দেহে থাকা এন্টিবডির বিরুদ্ধে শক্তিশালী হয়ে উঠছে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ড্যাভিড হো।

তিনি জানান, এই দুটি ভ্যারিয়েন্টই ভ্যাকসিন নেওয়া মানুষের দেহে থাকা অ্যান্টিবডিকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে তুলনামূলক বেশি শক্তিশালী।

বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ভ্যারিয়্যান্ট এরই মধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশে ছড়িয়েছে। এছাড়া এরিসের উপস্থিতি ভারতেও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। কয়েকটা রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে এরিসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানান তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরিসের উত্থান এবং বিস্তারে আতঙ্কিত হওয়া উচিত নয়। তবে, এটি এতে বোঝা যাচ্ছে করোনা ভাইরাস কীভাবে পরিবর্তন হতে থাকে এবং একটি সমস্যা হিসেবে টিকে থাকে।

তাই প্রত্যেকের উচিত করোনার নতুন ধরনের উদ্ভব ও সেগুলোর বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি সম্পর্কে ওয়াবিবহল থাকা।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, করোনার এই নতুন প্রজাতির বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য এখনও ধরা পড়েনি। আগের ধরনগুলোর মতই সর্দি, হাঁচি-কাশি, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, গলা ব্যথা ইত্যাদি এই উপসর্গ। তবে শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আগের মতোই করোনা-সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই নয়, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান ও চীনেও বৃদ্ধি পাচ্ছে ইজি.৫ ভ্যারিয়েন্ট। আর তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার নিয়মিত ভ্যারিয়েন্ট পর্যবেক্ষণের তালিকায় যুক্ত করেছে এরিস বা ইজি.৫ ভ্যারিয়েন্টকে।

ভাইরোলজিস্টদের মতে, সংক্রামক ভাইরাস যত বেশি মানুষের শরীরে ছড়াবে, ততই তার জেনেটিক সিকুয়েন্স বা জিনগত বিন্যাসের বদল হবে। মানুষের শরীরে ছড়াতে হলে ভাইরাসকে সংখ্যায় বাড়তে হবে, তাই দ্রুত তার বিভাজন হবে। আর যত বেশি বিভাজন হবে ততই ভাইরাস নিজেকে নতুন করে গড়েপিটে নেবে। সংক্রামক থেকে অতি সংক্রামক হয়ে উঠবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলেও একেবারে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকা উচিত হবে না। এখন থেকেই সতর্ক হতে হবে সব দেশকে। মানুষের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে সচেতনতা।

সারাবাংলা/এসবি/এনইউ

এরিস করোনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর