কক্সবাজারে নামছে বন্যার পানি, কমেনি দুর্ভোগ
১০ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৪৯
কক্সাবাজার: কক্সবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত খুব একটা বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
নামতে শুরু করেছে বন্যাকবলিত এলাকার পানি। তবে দুর্ভোগ কমেনি। যেসব স্থানে পানি কিছুটা নেমেছে সেসব এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। তারা বলছেন ঘরবাড়িতে রান্না করার সুযোগ নেই। বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারছে না।
এদিকে, পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতির চিহ্ন। বন্যায় মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, কাঁচা রাস্তা ও কালভার্ট ভেঙে গেছে। বেড়িবাঁধ, ঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে বীজতলা, ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের। এখনও ডুবে আছে পুরো পেকুয়াসহ বিভিন্ন উপজেলার বেশকিছু নীচু এলাকা।
চকরিয়া উপজেলায় বেশ কয়েকটি সড়কে দেখা গেছে ভাঙনের ক্ষতির দৃশ্য। কাকারা-মিনিবাজার সড়কের তিন কিলোমিটার এলাকার ৫০টি স্থানে সড়ক ভেঙে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চন্দনাইশে বন্যার পানি সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে আনোয়ারা-বাঁশখালী ও পেকুয়ার আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি কিছুটা কমলেও বিশেষ করে চকরিয়ার নিম্নাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়ন এবং পুরো পেকুয়া উপজেলা এখনও ডুবে আছে। ভুক্তভোগী এসব মানুষদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানিসহ ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। তবে ঢলের পানি পুরোপুরি না নামা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, সোমবার রাত থেকে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা ও বমুবিলছড়িসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নে ঢলের পানি নেমে গেলেও আরও ১৩টি ইউনিয়নসহ পুরো পেকুয়া উপজেলা এখনও ডুবে রয়েছে। এতে ভুক্তভোগী মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই।
চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নের পুরো এলাকাই বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পানি কিছুটা নেমে গেলেও কিছু এলাকা এখনও জলমগ্ন। ফলে দুর্ভোগ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। এতে ক্ষেত-খামার ও বসত ঘরের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক যোগাযোগ। প্রাথমিকভাবে সরকারি যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়।
চকরিয়া উপজেলার ইউএনও জেপি দেওয়ান জানান, চকরিয়ার অর্ধেকের বেশি এলাকা এখনও পানবন্দি। মাতামুহুরী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গত মানুষদের শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানিসহ সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। পানি পুরোপুরি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
প্রশাসনের তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে চকরিয়া ও পেকুয়াসহ জেলার ৬০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত তিন লাখের বেশি মানুষ। আর পাহাড় ধস ও ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে চকরিয়ায় আটজন, উখিয়ায় দুইজন এবং পেকুয়ায় একজন।
সারাবাংলা/এনইউ