Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘লুটেরাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক শক্তি থাকে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১২ আগস্ট ২০২৩ ২১:৪৪

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের ব্যাপারে দেশবাসীকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশবাসীর কাছে এটাই বলব, গণতন্ত্র ওদের মুখের কথা। গণতন্ত্রে ওরা বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্র ওরা দেশে রাখবেও না। ওরা দেশকে ফের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। তারা বলে তাদের সঙ্গে নাকি আন্তর্জাতিক শক্তি? কোন শক্তিটা আছে সেটাই আমরা জানতে চাই। কোনো শক্তি নেই তাদের সঙ্গে, লুটেরাদের সঙ্গে কেউ থাকে না।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনিবার্হী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে ১৫ আগস্টে শহিদ বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্য ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহিদদের জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রুদ্ধধার বৈঠক শুরু হয়।

সূচনা বক্তব্যে বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার করলই না। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে এলো মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন। ওই দুই বছরের জ্বালা-যন্ত্রণা-অত্যাচার মানুষ কি এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবে? এরপর তো হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত থেকে রায় হলো- অনির্বাচিত কেউ সরকারে আসতে পারবে না। এক নির্বাচিত সরকার আরেক নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আমরাই কিন্তু সংবিধান সংশোধন করে জনগণের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক অধিকার ছিল বলেই ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকারে এসেছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সরকারে এসে আমরা ধাপে ধাপে দেশের উন্নতি করেছি। দেশকে তো পেছনে টেনে নিইনি বিএনপির মতো। আমরা তো ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াট থেকে ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছি। আমরা তো পিছিয়ে যাইনি, যেটা বিএনপি করেছিল।’

বিএনপির আসা মানেই দেশের পেছনে চলে যাওয়া- এমন অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা ক্ষমতায় এলে ফের কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা থেকে শুরু করে যত রকমের ভাতা দিয়েছি সেগুলো বন্ধ করবে। একটি বাড়ি একটি খামার করেছিলাম, সেটি বন্ধ করেছিল। কৃষকদের ভতুর্কি দিয়েছিলাম, সেটা বন্ধ করেছিল। রেল বন্ধ, বিআরটিসি বন্ধ। সব তো বন্ধ করতে চেয়েছিল তারা। আওয়ামী লীগ এসে সব সচল করে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়িয়েছে। বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ফলে মানুষ কাজ পাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

দেশের মানুষ বিএনপির কথা বিশ্বাস করে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘হ্যাঁ, তাদের কিছু লোক আছে। এন্ট্রি আওয়ামী লীগ কিছু আছে থাকবে। এ ছাড়া স্বাধীনতাবিরোধী সেই শক্তিটা আছে। যুদ্ধাপরাধীদের আমরা সাজা দিয়েছি। তাদের আওলাদ-বুনিয়াদ আছে। জাতির পিতার হত্যাকারী, ৩রা নভেম্বরের হত্যাকারী তাদের কিছু আওলাদ-বুনিয়াদ আছে। এগুলো তো তাদের সঙ্গে থাকবেই, আমরা জানি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী আছে তাদের বলব, যে কথাগুলো বললাম তারা যেন ভেবে দেখে। দেশের অবস্থা কি ছিল! আর বিএনপি যদি কোনোদিন ক্ষমতায় আসে দেশের অবস্থা কোথায় যাবে? যেকোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলা করার মতো শক্তি বিএনপির নাই। তারা কোনোদিন করে নাই। মানুষকে অন্ধকারেই তারা ঠেলে দিয়েছে। আলোর পথ দেখাতে পারে নাই। আওয়ামী লীগ আছে বলেই নৌকা মার্কায় জনগণ ভোট দিয়েছে। আমরা তাদের সেবা করতে পারছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। কেউ আর এই দেশকে পেছনে নিতে পারবে না।’

বিএনপি-জামায়াতের মেয়াদে জাতির পিতার নাম, জয় বাংলা স্লোগান, ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘যতই ইতিহাসকে বিকৃত করতে চাক, যতই বাংলাদেশকে পেছনে টানতে চাক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছেন- কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। বাংলাদেশ কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বলব, এই খুনি, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ, মানুষ হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবাবি- এই বিএনপি থেকে দেশবাসী সাবধান ‘

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে হত্যার হুমকি প্রদানকারী ব্যক্তিকে এফবিআই গুলি করে মেরে ফেলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘থ্রেট, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, বোমা পুঁতে রাখা, সরাসরি গুলি- এগুলো তো অনবরত আমার ভাগ্যে আছেই। বেঁচে যাচ্ছি এই কারণে যে, আমার নেতাকর্মীরা মানবঢাল করে আমাকে রক্ষা করেছে। আজও তারা আমাকে থ্রেট করে বারবার। শুধু তাই নয়, আমেরিকায় আমার ছেলেকে কিডন্যাপ করার জন্য এফবিআই’র লোক ভাড়া করে। ক্ষমতায় থাকতে কত টাকা তারা বানিয়েছে একবার চিন্তা করে দেখেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তো জানতেই পারতাম না। ওই এফবিআই’র লোকের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়। তার দুর্নীতি ধরা পড়ে। তার বিরুদ্ধে যখন মামলা করা হয় তখন জানতে পারলাম, বিএনপির লোক তাকে টাকা দিয়েছে জয় আর আমার নাতি সোফিয়াকে কিডন্যাপ করে মেরে ফেলতে। এটা কিন্তু ওই কোর্টের রায়ে বেরিয়ে এসেছে। বিএনপির ওই দু’জনের নাম শফিক রেহমান আর মাহমুদুর রহমান। তাদের সঙ্গে বিএনপির এক লোকাল নেতাও জড়িত। এর জবাব আছে বিএনপির কাছে?

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি দেশবাসীকেই জানাতে চাই। তারাই জিজ্ঞেস করুক। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে ইলেকশন করতে চায়, গণতন্ত্র উদ্ধার করতে চায়। কী গণতন্ত্র দিয়েছে তারা বাংলাদেশকে? জিয়াউর রহমান দিয়েছে স্বৈরতন্ত্র মার্শাল ’ল, সারারাত কারফিউ। দিয়েছিল কারফিউ গণতন্ত্র।’

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

টপ নিউজ শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর