রুপিতে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ানোর তাগিদ
১৩ আগস্ট ২০২৩ ২৩:০৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভারতীয় রুপিতে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য যেন স্থায়ী হয় সেজন্য ব্যবসায়ীদের কাছে সময় চেয়েছেন দেশটির সহকারী হাই কমিশনার রাজীব রঞ্জন।
রোববার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় নগরীর জিইসি মোড়ের পেনিনসুলা হোটেলে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশন আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান। ভারতীয় রুপিতে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্য নিষ্পত্তির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ও এর গুরুত্ব বোঝাতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংক এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘ভারতীয় রুপিতে বাণিজ্য নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াটি ভারত-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গেম চেঞ্জার হতে পারে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এটি গেম চেঞ্জার হবে। কিন্তু এজন্য ব্যবসায়ী নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রবাহ বাড়াতে হবে রুপি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু রুপিতে বাণিজ্য নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা যেন তাড়াতাড়ি উপসংহারে পৌঁছে না যাই, এটা আমাদের অনুরোধ থাকবে। আমাদের উচিত এই প্রক্রিয়া স্থায়ী হওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সময় দেওয়া। তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।’
সভায় স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বাংলাদেশ অপারেশন প্রধান শ্রী অমিত কুমার রুপিতে বাণিজ্য নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক বিশদভাবে তুলে ধরেন। উপস্থিত অংশীজনদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক বদিউজ্জিামান দিদার, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহীন আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের সুভাষ চন্দ্র দাশ ও সাইফুল আজিজ তাদের মতামত তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নতুন সভাপতি ওমর হাজ্জাজ, প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ তানভীর, ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম এবং কেএসআরএম’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার রাহাত এ সময় বক্তব্য দেন।
এদিকে, এদিন বিকেলে একইস্থানে ভারতের পর্যটন সুবিধা নিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ‘ওয়েলকামস টু ইন্ডিয়া, এ ট্যুরিজম প্যারাডাইস’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সহকারী হাই কমিশনের কর্মকর্তা, ভারত-বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন।
সভায় ভারতের সহকারী হাই কমিশনার রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘বৈচিত্র্য যাকে বলে সেটি ভারতেই কেবল পাওয়া সম্ভব। মরুভূমি, বরফ, পাহাড়, সমুদ্র, পর্বত, বৃষ্টি— সবই পাওয়া যাবে একটি মাত্র দেশে, যা পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, ভারতে যেসব ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে যেমন তাজমহল, কুতুব মিনার, এসব দেখতে পর্যটকরা আসেন। একদিকে হিন্দুদের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্র, অন্যদিকে মুসলমানদের আজমির, পাঞ্জাবে গোল্ডেন টেম্পল, বুদ্ধ গয়া, জৈন ধর্মের প্রবর্তক মহাবীরের জন্মস্থান। কি নেই ভারতে !’
‘কথায় আছে যা নেই ভারতে, তা নেই পৃথিবীতে। বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রথম পছন্দ ভারত। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ পর্যটক যান। গত কয়েকবছর আগে বাংলাদেশ ছিল প্রথম স্থানে, যেখান থেকে সর্বোচ্চ পর্যটক ভারতে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, ভারতে চিকিৎসার জন্য প্রচুর মানুষ বাংলাদেশ থেকে যান। পর্যটক এবং চিকিৎসার জন্য যারা ভারতে যান তাদের সব সময় স্বাগতম জানায় ভারত সরকার।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম