আসামির জামিনে ‘অনাপত্তি’ দিয়ে বাদী ২ ঘণ্টা হাজতে
১৬ আগস্ট ২০২৩ ১৯:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তিন আসামিকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করেছিল পুলিশ। আদালত আসামিদের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করছিলেন। এসময় মামলার বাদী এসে জানান, আসামিদের জামিনে তার আপত্তি নেই। আদালত বাদীকেই প্রায় দু’ঘণ্টা হাজতে আটকে রেখে আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রামের দ্বিতীয় মহানগর হাকিম মো. অলিউল্লাহ’র আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে। এর আগে, গত ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরীর চান্দগাঁও থানার চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় মো. রাকিব নামে এক তরুণের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাকিবের চাচা সাহাবউদ্দিন বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাহাবউদ্দিন চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় ভ্যানগাড়িতে ফলমূল বিক্রি করেন। মাঝে মাঝে তার দোকানে ভাতিজা রাকিবও বসেন। ১০ আগস্ট বিক্রি বাবদ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে বাসায় যাবার পথে মোটরসাইকেলে করে তিন যুবক গিয়ে তাকে ছুরির ভয় দেখিয়ে টাকাগুলো ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত চলে যায়।
মামলা দায়েরর পর চান্দগাঁও থানা পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার রাতভর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- নাঈম উদ্দীন জিতু (২৫), রমিজ খান চিশতী (২৫) এবং তৌহিদুল ইসলাম (৩০)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তিন ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করে রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করি। তিনজনের কাছ থেকে ছিনতাই করা ২ হাজার ৪২০ টাকা জব্দ করি। এরপর তৌহিদুল ইসলামের তথ্য অনুযায়ী ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল বায়েজিদ বোস্তামি থানার উত্তরা আবাসিক এলাকা থেকে জব্দ করি।’
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে তিন আসামিকে ছিনতাইয়ের মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী তাদের জামিনের আবেদন করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন না থাকায় আদালত জামিন শুনানির অনুমতি দেন। বিকেল সাড়ে তিনটায় জামিন শুনানি শুরু হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে শুনানি চলে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জামিন শুনানিতে মামলার বাদী সাহাবউদ্দিন হাজির হয়ে বলেন, জামিনে ওনার কোনো আপত্তি নেই। এসময় আদালত বাদীকেই কোর্ট লকআপে ঢোকানোর নির্দেশ দেন। বাদীকে লকআপে রাখা অবস্থায় জামিন শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর বাদীকে লকআপ থেকে বের করে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।’
এ বিষয়ে জানতে বাদী সাহাব উদ্দিনের মোবাইলে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস