দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১৮বছর পূর্তি আজ
১৭ আগস্ট ২০২৩ ০০:১৬
ঢাকা: দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার ১৮ বছরপূর্তি আজ বৃহস্পতিবার। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন পরিকল্পিতভাবে দেশের ৬৩ জেলায় একই সময়ে এই সিরিজ বোমা হামলা চালায়। মুন্সীগঞ্জ ছাড়া দেশের সব জেলায় প্রায় ৫০০ পয়েন্টে এ হামলা হয়। এতে দুজন নিহত হন। আহত হয় প্রায় ১০৪ জন।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের মেয়াদে সংঘটিত দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আজ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছাত্রসমাজের পদযাত্রা ও সমাবেশ করবে। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
পুলিশ সদরদফতর ও র্যাবের তথ্যানুযায়ী, ঘটনার পরপরই সারাদেশে ১৫৯টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে ডিএমপিতে ১৮টি, সিএমপিতে ৮টি, আরএমপিতে ৪টি, কেএমপিতে ৩টি, বিএমপিতে ১২টি, এসএমপিতে ১০টি, ঢাকা রেঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ১১টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৭টি, খুলনা রেঞ্জে ২৩টি, বরিশাল রেঞ্জে ৭টি, সিলেট রেঞ্জে ১৬টি, রংপুর রেঞ্জে ৮টি, ময়মনসিংহ রেঞ্জে ৬টি ও রেলওয়ে রেঞ্জে ৩টি। ১৫৯টি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ছিল ১৩০ জন।
চারদলীয় জোট সরকারের মেয়াদে জঙ্গিরা সারাদেশে শক্ত অবস্থান তৈরি করে। ২০০৫ সালের পরবর্তী সময়ে কয়েকটি ধারাবাহিক বোমা হামলায় বিচারক ও আইনজীবীসহ ৩০ জন নিহত হন। আহত হন চার শতাধিক। ওই বছরের ৩ অক্টোবরে চট্টগ্রাম, চাঁদপুর এবং লক্ষ্মীপুরের আদালতে জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত ও বিচারকসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
এর কয়েকদিন পর সিলেটে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিপ্লব গোস্বামীর ওপর বোমা হামলার ঘটনায় তিনি ও তার গাড়িচালক আহত হন। ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠিতে বিচারক বহনকারী গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে নিহত হন ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের বিচারক জগন্নাথ পাড়ে ও সোহেল আহম্মদ। এ হামলায় আহত হন অনেনে।
সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে ২৯ নভেম্বর গাজীপুর বার সমিতির লাইব্রেরি ও চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে। গাজীপুর বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীর পোশাকে প্রবেশ করে আত্মঘাতী এক জঙ্গি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ হামলায় আইজনজীবীসহ ১০ জন নিহত হন। আত্মঘাতী হামলাকারী জঙ্গিও নিহত হয়।
একই দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে জেএমবির আত্মঘাতী জঙ্গিরা বিষ্ফোরণ ঘটায়। সেখানে রাজিব বড়ুয়া নামের এক পুলিশ কনস্টেবল ও একজন সাধারণ নাগরিক নিহত হন। পুলিশসহ প্রায় অর্ধশত আহত হন। ১ ডিসেম্বর গাজীপুর ডিসি অফিসের গেটে আবারো বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে নিহত হন গাজীপুরের কৃষি কর্মকর্তা আবুল কাশেম। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন।
৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা শহরের বড়পুকুর পাড় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর অফিসের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতী জঙ্গিরা। সেখানে স্থানীয় উদীচীর দুই নেতাসহ আট জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম