এবার বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম, ডিমের ডজন ১৫০ টাকা
১৮ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৫১
ঢাকা: নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার যেন অস্থিতিশীল। একটির দাম কিছুটা কমলে বাড়তে থাকে অন্যটির দাম। গত সপ্তাহে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছিল, এবার বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ১৮০ টাকা ডিমের ডজন আজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ফলে বাজার করতে আসা ক্রেতাদের অবস্থা বরাবরের মতোই শোচনীয়।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর কাওরান বাজার ও বাড্ডা কাঁচাবাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৯০-২০০ টাকায়। যা আজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়। এছাড়া সোনালি মুরগি গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৮০-৩০০ টাকা, যা আজকে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকায়। লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩২০-৩৩০ টাকা।
অন্যদিকে, দেশি মুরগি গত সপ্তাহে ৫৫০-৬০০ টাকা বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৫২০-৫৫০ টাকা।
তবে ডিম এবং ব্রয়লারসহ সব মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। দাম অপরিবর্তিত থাকলেও অন্যসব সবজির দাম বাড়তি।
বাজারে এবার সব ধরনের সবজির দাম ২০-৫০ টাকা কেজিতে বেড়েছে। পটল কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, করলা ৯০ টাকা, ঝিঙে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, কচুরমুখি ১২০টাকা, লাউ প্রতিটি ১১০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পেঁপে ৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৮০ টাকা (১ কেজি), ফুলকপি ৯০ টাকা, মুলা ৯০ টাকা, লম্বা বেগুন ৯০টাকা, বাঁধাকপি পিস ৮০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, আলু ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম বাড়ার বিষয়ে কাওরানবাজারের পাইকারি সবজি বিক্রেতা নয়ন পাটোয়ারী বলেন, ‘বাজারে সবজি কম। গত কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মোকামে সবজি কম এসেছে। এখন ধরেন বাজারে পটল বা বেগুন বেশি। ফলে যে পণ্য বেশি সেটার দাম কমবে আর যেটার উপস্থিতি কম সেটার দাম বাড়বে। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। আমাদের কাছে পণ্যগুলো আসে কয়েকটি হাত ঘুরে। আমরা তো আর সরাসরি ক্রয় করি না, ফলে ক্রেতারা আমাদের ভুল বোঝে। আমরাও নিরুপায়।’
কাওরানবাজারে বাজার করতে আসা মোকাদ্দিস আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাজার করতে এসে প্রতি সপ্তাহে দেখি দাম বাড়ছেই। এখানে স্থির বলতে কিছু নেই। গত সপ্তাহে ডিম আর মুরগির দাম বেড়েছে। সেগুলো কিনিনি। আজ সবজি এবং মাছের দাম বেশি। এগুলোও আজ নিলাম না। আমাদের খাওয়ার মতো কিছুই আর নেই। দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে টিকে থাকাই এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।’
মাছ বাজারে গিয়েও দেখা যায়, বাজার গরম। কেজি প্রতি ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মাছের দাম। পুঁটিমাছ ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ৪২০ টাকা, রুই ৪৭০টাকা, কাতলা ৫৫০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, বাইলা ৯০০ টাকা, পাবদা ৮৫০ টাকা, রূপচাঁদা ১৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ১২০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৭৫০ টাকা, মাগুর ৯০০ টাকা, শোল ৬০০ টাকা, কই ৪৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দাম বাড়তি নিয়ে কাওরান বাজারের মাছ বিক্রেতা ফরিদুল আলম বলেন, ‘মাছের সামগ্রীর দাম বেশি। এছাড়া আমাদের মাছ আনতে হয় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে। সেইসব জায়গা থেকে মাছ আনতে আমাদের খরচ বেশি পড়ে যায়। আবার অনেক মাছ ঢাকায় আসতে আসতে নষ্ট হয়ে যায়। সব খরচ যোগ হয়ে মাছের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। আমরা তো আর লোকসান করে ব্যবসা করতে পারিনা। এখন যারা পারবে তারাই খাবে মাছ। আমরাও বিপদে আছি আগের মতো আর ব্যবসা নেই।’
তবে বাজারে এখনও গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস ৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/এসজে/এমও