মির্জা ফখরুল সাবধানে কথা বলবেন: নানক
১৮ আগস্ট ২০২৩ ২৩:০৪
ঢাকা: সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য শিক্ষিত বর্বর অশিক্ষিত বর্বরের চেয়েও ভয়ানক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব সাবধানে কথা বলবেন। সব কিছু ইতিহাস জেনে, পরিসংখ্যান জেনে কথা বলবেন। শিক্ষিত বর্বর অশিক্ষিত বর্বরের চেয়েও ভয়ানক সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য। পাকিস্তানিরা দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠন করেছিল। তার মৃত্যুর আগে জিডিপি ছিলো ৯ ভাগ ছিল। খালেদা জিয়া- এরশাদ সরকার তো দূরের কথা আওয়ামী লীগ সরকারও এখন পর্যন্ত ৯ ভাগ জিডিপিতে পৌঁছাতে পারিনি।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের ও একুশে গ্রেনেড হামলায় বর্ণিত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকরের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে যুব মহিলা লীগ।
এ সময় রাষ্ট্রের নাগরিকদের সুরক্ষায় সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অনেক উন্নয়নশীল দেশও এই দু:সাহস করে না। আমরা সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এজন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।
মানববন্ধনে বর্বরতম ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় দণ্ডিত বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি দাবিও জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এই সদস্য। বিএনপি-জামায়াত জোট শাসনামলে ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা ঘটনা তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে এই রাজপথে রক্তের প্লাবন বইয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সেদিন হত্যার লীলাভুমিতে পরিণত করেছিল তারেক রহমান। সেদিন খালেদা জিয়ার সরকারের শাসনামলে কেন হাওয়া ভবন সরকার গঠন করা হলো খুনি তারেকের নেতৃত্বে। তার পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শান্তি সমাবেশে একটি, দুইটি, পাঁচটি নয়; ১৪টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলো।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল বলেছেন, জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা প্রশ্ন রাখতে চাই, বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী কে হয়েছে? সেই সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জেনারেল জিয়া অবৈধভাবে আইন লঙ্ঘন করে সেদিন হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আত্মস্বীকৃত খুনিদের এমপি বানিয়ে এনেছিলেন। মির্জা ফকরুল জবাব দেবেন কি কারনে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের সংসদে এনেছিল?
“যখন খুনিদের বিরুদ্ধে জাগরণ গণধিক্কার সৃষ্টি হয়েছে, তখন খুনিদের বিশেষ বিমানে বিদেশে কে পাঠিয়েছিলো? সে জিয়াউর রহমান। বিভিন্ন দুতাবাসে চাকরি কে দিয়েছিল? হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত বিধায় হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী জিয়াউর রহমান এই খুনিদেরদের দেশ থেকে বাইরে পাঠিয়ে ওই বিদেশি বাংলাদেশের বিভিন্ন দুতাবাসে চাকরি দিয়েছিল বলেও দাবি করেন নানক।
মির্জা ফখরুলকে ইতিহাস জেনে কথা বলার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ নেতা নানক। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যাদেরকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তাদের মধ্যে নুর চৌধুরী আছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায় আছেন মেজর কিসমত। আমাদের প্রশ্ন এই খুনিরা যে দেশ দুটিতে রয়েছে সেই দেশ দুটি মানবাধিকারের গণতন্ত্র সভ্যতার কথা বলে আর খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়। সেটা ধিক্কার জানানোর ভাষা জানা নেই।
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বাঙালি জাতির জীবনে শান্তি সৃষ্টি করতে হলে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করতে হলে, মুক্তিযুদ্ধের মুল্যবোধকে বাঁচাতে হলে ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রক্ষা করতে হলে সেই খালেদা-তারেকের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে, পঁচাত্তরের খুনিদের এবং ২১ আগস্টের খুনদের অবশ্যই বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়, গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।
যুব মহিলা লীগের সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুনতানা লিলি সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ফারজানা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি তাহেরা খাতুন লুৎফা, সাধারণ সম্পাদক শামীমা রহমান বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে