Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে জিম্মি রোগীরা, পকেট কাটছে সিন্ডিকেট চক্র

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৩৮

ঠাকুরগাঁও : দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলার চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থল ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। আর এ হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার প্রায় ৫-৬ শতাধিক রোগী। অন্যান্য বিভাগে একাধিক ডাক্তার থাকলেও সার্জারি বিভাগে শুধুমাত্র একজন চিকিৎসক। এক সার্জারি নির্ভর হওয়ায় গরিব মানুষের পকেট কাটছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। আর এ চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে ডা. শিহাব মাহমুদ শাহরিয়ার সুজনের বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞাপন

এ সব বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জনের কাছে ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিয়েছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ইসমা আক্তার বলেন আমরা সিহাব স্যারকে দেখাইছি, ওনি বলে কিডনিতে পাথর। এটি অপারেশন লাগবে। এই অপারেশন হাসপাতালে হবে না, মেশিনে করতে হবে। ক্লিনিকে ভর্তি হই। সে মোতাবেক নর্দান মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে ভর্তি করাই। ক্লিনিকে অপারেশন শেষে বলে এটি ওপেন হয়েছে। ক্লিনিকের সঙ্গে কন্ট্রাক্ট হয় ২২ হাজার টাকা কিন্তু পরিবর্তে আরও ৪ হাজার টাকা দাবি করলে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় নিতে হয়। ঔষধ পত্রসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরে রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।

শহরের আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা নাজমা আক্তার মিম বলেন, ‘আমার মাকে ডাক্তার শিহাবের চেম্বারে দেখাই। তিনি বলেন গোলব্লাডারে পাথর। আমরা প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি হই। পাঁচ দিন থাকার পরেও বিভিন্ন অজুহাতে অপারেশন না হলে পরে ক্লিনিকে ভর্তি করাই।’

রোগী আশিক (২০) বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, আমার বাবা ভ্যান চালায়, এই যদি অবস্থা হয় তাহলে আমরা কোথায় যাব?’

উত্তর হরিহরপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার রোগী অসুস্থ হলে ডাক্তার শিহাবের কাছে নিয়ে যাই। তিনি দেখার পরে বলেন ক্লিনিকে ভর্তি করাতে হবে। হাসপাতালে হবে না, ৩ লাখ টাকা লাগবে। পরে ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে ৪০ হাজার টাকায় অপারেশন করাতে হয়। ঔষধপত্রসহ অন্যান্য খরচ তো আছেই। কী করব কোনো উপায় তো নেই।’

ঠাকুরগাঁও শহরের সত্যপীর ব্রিজ এলাকার আকাশ ইসলাম বলেন, ‘আমার বড় ভাই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তিনি সুস্থ্ হতে না হতেই পরের দিন রিলিজ দেয়। এ ব্যাপারে কথা বললে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ সময় অন্যান্য রোগীরা কথা বললে তাদেরকেও রিলিজ দেয়। এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নিলেন না।

বিজ্ঞাপন

নর্দান মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মালিক মিঠু এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতা জয় চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণ মানুষ দিশেহারা অবস্থায় হাসপাতালে আসে চিকিৎসা নিতে কিন্তু একটি দালাল চক্র, সিন্ডিকেট চক্র এই সরলতার সুযোগ নিয়ে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।’

তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল।

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. নূর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ‘তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/একে

জিম্মি ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর