Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বের সঙ্গে মিলিয়ে সাইবার সিকিউরিটি আইন করার তাগিদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৫:৫৫

ঢাকা: বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিল রেখে সাইবার সিকিউরিটি আইন করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, ‘উন্নত দেশের আইনের সঙ্গে আমাদের দেশের আইনের মিল নেই। এই আইনের যাতে অপপ্রয়োগ না হয় সেদিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি আইনকে যুগোপযোগী এবং আধুনিক করা প্রয়োজন। এই আইন যেন বিরোধী মত ও রাজনৈতিক দলকে দমনের জন্য না হয়।’

শনিবার (১৯ আগস্ট) সেন্টার ফর গর্ভনেন্স স্ট্যাডিজের ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা, উন্নত গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনিয়ারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সম্প্রতি ডিজিটাল সিকিরিটি অ্যাক্ট আইনটি সংশোধন করে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামে একটি নতুন আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ প্রেক্ষিতে ওয়েবিনিয়ারটির আয়োজন করা হয়।

ওয়েবিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট কামাল আহমেদ। এতে আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিসটিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সি আর আবরার, নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির, আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি মিডিয়া এবং সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক আসিফ বিন আলী এবং গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রোজিনা বেগম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।

কামাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নাগরিকদের নিপীড়নের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে বলে সমালোচনার মুখে। এখন তা নামমাত্র পরিবর্তন করে করা হচ্ছে সাইবার আইন। তবে সরকারের যুক্তি একই আছে। আর সেটি হচ্ছে উন্নত দেশগুলোতেও এই আইন আছে। ইন্টারনেট রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর তথ্য প্রকাশ, মানহানি এবং শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে এমন কিছুর প্রকাশ ও প্রচার বন্ধের বন্ধের প্রয়োজনে আইনটি করা হয়েছে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। গত ২৩ মে ভয়েস অব আমেরিকার এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশে না, এটা কিন্তু পৃথিবীর সব দেশেই আছে। আমেরিকায়ও আছে, তারপর ইংল্যান্ডে আছে, সব দেশেই কিন্তু নেওয়া আছে। ওই সাক্ষাৎকারে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমেরিকার ডিজিটাল আইনে কী আছে, যুক্তরাজ্যের আইনে কী আছে সেগুলো তার সরকার দেখবে।’

ডিসটিংগুইশড প্রফেসর ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছুই পরিবর্তন না করে নতুন আইন করা হয়েছে। এজেন্সির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তো মত প্রকাশ হতে পারে না, তাছাড়াও বহু সমালোচিত অফিস সিক্রেসি অ্যাক্ট এই নতুন আইনেও আছে। সাইবার সিকিউরিটি আইনে কিছু ধারা সম্পূর্ণ হুবহু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরই ধারা। যুক্তরাজ্যে একটি আইন প্রণয়নের আগে ২০১৮ সাল থেকে নিয়ে প্রথমে গবেষণা হয়েছে, স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথা হয়েছে, সেখানে আমাদের দেশে সাইবার সিকিউরিটি আইন নিয়ে নাগরিকের মতামত দেবার সময় মাত্র ১৪ দিন। তাড়াহুড়া করে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়নের চেষ্টা তাই প্রশ্নবিদ্ধ।’

অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের খুশি করবার জন্য কোন আইন হতে পারে না, কাউকে খুশি করবার জন্য আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে না, আইন প্রণীত হবে সবার জন্য। আদালত, আইন দিয়ে ইতিহাস চর্চা বন্ধ করা উচিত নয়, জ্ঞানের চর্চার উপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন খড়গস্বরূপ।’

আর্টিকেল নাইনটিন-এর বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক, ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর এটি নিয়ে কথা হলেও সংশোধন আদৌ করা হয়নি। বিশ্ব সূচক অনুযায়ী, ডেনমার্কের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সবচেয়ে প্রশংসিত এবং যেসব দেশের আইন সমালোচিত তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। সমালোচিত আইন বাতিল না করে, তার অপব্যবহারের হিসেব না দিয়ে সংশোধন করে নতুন নাম নিয়ে আইন প্রণয়ন অযৌক্তিক।’

সারাবাংলা/জেজে/এমও

টপ নিউজ সাইবার সিকিউরিটি আইন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর