ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে
১৯ আগস্ট ২০২৩ ১৭:১৬
ঢাকা: নানা ধরনের গুজবে পুঁজিবাজার গত সপ্তাহে (১৩ থেকে ১৭ আগস্ট) বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। ফলে সপ্তাহ শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব সূচক, বাজার মূলধন ও লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে।
গত সপ্তাহের লেনদেনের শুরুতে (১৩ আগস্ট) ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষ দিন (১৭ আগস্ট) ডিএসইর বাজার মূলধন নেমে আসে ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার ফলে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে।
জানা গেছে, গত সপ্তাহজুড়ে হ্যাকাররা কয়েকটি ব্যাংক হ্যাকিংয়ের চেষ্টা করছে, বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, রিজার্ভ আরও কমা, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) হ্যাকিংয়ের কবলে পড়ার মতো নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পর পর দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতনও হয়। ফলে সপ্তাহশেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দুই হাজার কোটি টাকার ওপর কমে গেছে। সেই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। পাশাপাশি কমেছে লেনদেন।
বাজারে এই ধরনের গুজব ঠেকাতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার অ্যাসেট ম্যানেজার ও ফান্ড ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করে। এসব বৈঠকে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় অ্যাসেট ম্যানেজার ও ফান্ড ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানায় বিএসইসি। এতে সপ্তাহের শেষদিন পুঁজিবাজারে কিছুটা গতি ফিরে আসে।
গত সপ্তাহের ডিএসই‘র বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে৪০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৯১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ২৭টির শেয়ার ও ইউনিটের। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির,২২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ১২ টি প্রতিষ্ঠানের কোন শেয়ার লেনদেন হয়নি।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪২ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৭ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে (৬ থেকে ১০ আগস্ট) সূচক কমে হয় ৩২.৬১ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ কমলো ডিএসইর প্রধান সূচক।
এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসই‘র প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ২১.২৭ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯.৫৯ পয়েন্ট। এর মাধ্যমে ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক টানা পাঁচ সপ্তাহ কমে।
অপরদিকে প্রধান মূল্যসূচকের মতো টানা চার সপ্তাহ কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৯.৯৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৪.৮৮ পয়েন্ট।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪১ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৯০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৭১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৫৮১ কোটি ৮ লাখ টাকা।
সারাবাংলা/জিএস/এমও